-
ঢাকার আলিয়ঁস ফ্রঁসেজে "পুরান ঢাকা - আখ্যান, প্রতিফলন, ভবিষ্যত: ঐতিহ্যবাহী পথের উন্মোচন" শীর্ষক প্রদর্শনীতে ‘ইউনিভার্সিটি অফ এশিয়া প্যাসিফিক’-এর স্থাপত্যের শিক্ষার্থীদের চিন্তাশীল এবং অনুসন্ধানী প্রচেষ্টা প্রদর্শিত হচ্ছে। প্রদর্শনীটি সকলের জন্য উন্মুক্ত থাকবে প্রতিদিন বিকাল ৩টা থেকে ৯টা পর্যন্ত লা গ্যালারিতে, আলিয়ঁস ফ্রঁসেজ দ্যা ঢাকা, ধানমন্ডি, বুধবার, ২৬ ফেব্রুয়ারী ২০২৫ পর্যন্ত। |
|
ঐতিহাসিক নিদর্শন এবং প্রাচীন জনবসতি একটি জাতির অতীতের জীবন্ত সাক্ষী হিসেবে কাজ করে, তার সাংস্কৃতিক পরিচয় এবং ঐতিহ্যকে রূপ দেয়। এই চিরন্তন নিদর্শনগুলির মধ্যে রয়েছে পুরান ঢাকা, যা চার শতাব্দীর ইতিহাসের সাক্ষী। এর উৎপত্তিস্থল খ্রিস্টপূর্ব ৭ম শতাব্দীতে। বুড়িগঙ্গা নদীর তীরে অবস্থিত, ঢাকা ১৭শ শতাব্দীতে মুঘল সাম্রাজ্যের বাংলা প্রদেশের রাজধানী জাহাঙ্গীরবাদ হিসেবে সমৃদ্ধ হয়েছিল। যুগ যুগ ধরে এই শহরটি বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠীর মিলনস্থলে পরিণত হয়েছে। লালবাগ দুর্গে পরী বিবির শেষ সমাধিস্থল থেকে শুরু করে নবাব আমলের আহসান মঞ্জিল, খান মোহাম্মদ মৃধা মসজিদ এবং শায়েস্তা খান মসজিদের অনুরণিত আজান থেকে শুরু করে হোসেনী দালানের আধ্যাত্মিক প্রতিধ্বনি - পুরান ঢাকা সময়ের বর্ণনায় ভেসে আছে। ফরাশগঞ্জের মশলা বাজারের স্মৃতিবিজড়িত সুবাস, বিউটি বোর্ডিংয়ের সাহিত্য বিতর্ক, ঢাকেশ্বরী মন্দিরের ছন্দময় ঢোল এবং কার্জন হলের ঔপনিবেশিক সৌন্দর্য, সবই ঐতিহাসিক একটি মহানগরের গল্প বলে। |
যদিও পুরান ঢাকা আজ সাংস্কৃতিক সমৃদ্ধির এক আলোকবর্তিকা, তবুও দ্রুত নগরায়ণ এবং অনিয়ন্ত্রিত উন্নয়নের ফলে এর স্থাপত্য সম্পদ ক্রমবর্ধমান হুমকির সম্মুখীন। এই ঐতিহাসিক ঐতিহ্যকে যেন হারিয়ে না যায়, তাই এশিয়া প্যাসিফিক বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থাপত্য বিভাগ, পর্যটন এবং শিক্ষার মাধ্যমে পুরান ঢাকার ঐতিহ্য নথিভুক্তকরণ, সংরক্ষণ এবং প্রচারের জন্য ব্যাপক প্রচেষ্টা গ্রহণ করেছে। |
বিশিষ্ট স্থাপত্য সংরক্ষণবিদ এবং স্থাপত্য বিভাগের ডিন, ডঃ আবু সাঈদ এম. আহমেদের নেতৃত্বে একদল নিবেদিতপ্রাণ শিক্ষার্থী গত বছর পুরান ঢাকার অলিগলি পরীক্ষা-নিরিক্ষা করে কাটিয়েছেন। সূক্ষ্ম গবেষণার মাধ্যমে তারা কেবল স্থাপত্য ঐতিহ্যই নয়, স্থানীয় জীবনধারা, পেশা এবং আর্থ-সামাজিক অবস্থার বিস্তারিত বিবরণও আবিষ্কার করেছেন। এই উদ্যোগের অংশ হিসেবে, ছয়টি গুরুত্বপূর্ণ স্থাপত্য ঐতিহ্যবাহী রুট চিহ্নিত করা হয়েছে, যা পর্যটকদের পুরান ঢাকার সমৃদ্ধ ইতিহাস এবং সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য সম্বন্ধে জানতে সাহায্য করবে। এই প্রচেষ্টার লক্ষ্য ঐতিহ্য-ভিত্তিক পর্যটনকে উৎসাহিত করা, একই সাথে স্থানীয় কমিউনিটির জন্য ব্যবসা এবং পেশার সুযোগ বৃদ্ধি করা। |
প্রতিবেদক: স্থপতি ফাইজা ফাইরুজ |