সাউথইস্ট ইউনিভার্সিটি ভার্টিক্যাল ক্যাম্পাস

স্থাপত্য ও নির্মাণ
প্রকল্প
২১ আগস্ট, ২০২৪
১১৮
সাউথইস্ট ইউনিভার্সিটি ভার্টিক্যাল ক্যাম্পাস

 

প্রকল্পের নাম :  সাউথইস্ট ইউনিভার্সিটি ভার্টিক্যাল ক্যাম্পাস

স্থান :  ২৫২ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা ১২০৮

ক্লায়েন্ট :  সাউথইস্ট ইউনিভার্সিটি

মোট নির্মাণাধীন এলাকা :  ৩০৬৭০ বর্গ মিটার

প্রকল্প শুরু : ২০২০

প্রকল্প সমাপ্তি : ২০২৩

খরচ :  আনুমানিক ৭৫০+ মিলিয়ন টাকা

স্থাপত্য উপদেষ্টা প্রতিষ্ঠান :  কিউব ইনসাইড ডিজাইন লিমিটেড

প্রধান স্থপতিখন্দকার আসিফুজ্জামান

 

ডিজাইন টিম :  শাখাওয়াত হোসেন রকি, মোঃ শরিফুজ্জামান, মেহরি ফারনাজ, আসফিয়া ইসলাম

স্ট্রাকচারাল ইঞ্জিনিয়ার : নজরুল আলম

ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার : আকবর আলি গাজি

এইচভিএসি ও প্লাম্বিং ইঞ্জিনিয়ার : ইদ্রিসুর রহমান

ফটোগ্রাফার : আসিফ সালমান

ঢাকার মত ঘনবসতিপূর্ণ একটি শহর যেখানে শান্তিতে নিঃশ্বাস নেওয়ার মত ঠাঁই নেই, সেখানে ছোট্ট এক টুকরো জমিতে একটি স্থাপনার ভেতরে সম্পূর্ণ একটি বিশ্ববিদ্যালয় তার সকল সুযোগ সুবিধাসহ স্থাপন করাটাই ছিল সাইথইস্ট ইউনিভার্সিটি প্রজেক্টের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। প্রকল্পটির মূল ধারণা ছিল একটি ভার্টিক্যাল ক্যাম্পাস ডিজাইন করা, যেখানে শিক্ষার্থীদের উদ্দীপিত করার পরিবেশটাই আবর্তিত হয় মাঝের নিউক্লিয়াস স্পেসকে ঘিরে। এই কেন্দ্রীয় নিউক্লিয়াস স্পেসটি শুধু স্থানের বিন্যাসই ঘটায়নি, বরং তৈরি করে দিয়েছে সূর্যের আলো আসার এক সুবর্ণ পথ। এই আলোকস্নাত স্পেস সৃষ্টি করেছে অনুপ্রেরণামূলক কিছু ছোট ছোট জায়গা, যেখানে শিক্ষার্থীরা আড্ডা দিতে পারে, পারে গলা ছেড়ে গান গাইতে অথবা ফ্ল্যাশ মব করতে। এক কথায় তাদের মধ্যে বিভিন্ন উপায়ে গঠনমূলক সংযোগ স্থাপন করতে পারে, যা একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের সুষ্ঠু পরিবেশের জন্য একান্ত প্রয়োজনীয়।

ঢাকা শহর এখনো বিভিন্ন দিকে পরিকল্পিত অপরিকল্পিত - দুই উপায়েই বর্ধিত হচ্ছে। শহরে প্রতিদিন যোগ হচ্ছে মানুষ, নতুন স্বপ্নের খোঁজে, নতুন চাকরির সন্ধানে অথবা উচ্চ শিক্ষার আহ্বানে। শহরে রয়েছে একশোর বেশি বিশ্ববিদ্যালয়, যার অধিকাংশেরই নেই পর্যাপ্ত জায়গা। কিন্তু উচ্চশিক্ষা শুধুমাত্র ক্লাসরুম ভিত্তিক কোন কার্যক্রম নয়, একটি ক্যাম্পাসের জন্যে ক্লাসরুম ছাড়াও আরো অনেক সুযোগ-সুবিধার প্রয়োজন। একটি ক্যাম্পাসে যথেষ্ট পরিমাণে স্পেস প্রয়োজন, যেখানে শিক্ষার্থীরা সহপাঠ কার্যক্রম চালাতে পারে এবং আড্ডা দিতে পারে মন খুলে। ঢাকার মত এই স্থান-সংকটপূর্ণ শহরে এই রকম জায়গার সংকুলান সত্যিই মুশকিল। এই সমস্যার সমাধান করা হয়েছে বুদ্ধিদীপ্ত স্থাপনা নকশার মাধ্যমে। সাইথইস্ট ইউনিভার্সিটির ক্যাম্পাসকে স্বাস্থ্যকর, ভারসাম্যপূর্ণ এবং আকর্ষণীয় স্থানিক বিন্যাস দ্বারা সাজানো হয়েছে এই ডিজাইনের মাধ্যমে এবং এই ক্যাম্পাস পরোক্ষভাবে শিক্ষার্থীদের কার্যকরী শিক্ষার দিকে পরিচালিত করে - এটইি ছিল এই প্রকল্পের স্থাপত্য উপদেষ্টা প্রতিষ্ঠান কিউব-ইনসাইড'-এর মূল লক্ষ্য। একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের ক্লাসরুম স্থান ব্যতীত অন্যান্য অনানুষ্ঠানিক স্থানের প্রয়োজন এবং একই সাথে প্রয়োজন এর নিজস্ব একটি আইডেন্টিটি, যেটি তাদের নিজস্ব ক্যাম্পাসের প্রতীক হয়ে উঠবে। সাইথইস্ট ইউনিভার্সিটির ক্ষেত্রে তাদের কেন্দ্রীয় নিউক্লিয়াস স্পেসটাই হয়ে উঠেছে সেই কাঙ্খিত পরিচয়।

18. the Building in the Context

03. View From the Entrance Road

ছবি: রাস্তা হতে প্রধান প্রবেশপথ

তেজগাঁও এর যে সাইটে সাইথইস্ট ইউনিভার্সিটির নতুন ক্যাম্পাসটি গড়ে উঠেছে, সেটি আগে শিল্প ব্যবহারের প্লট ছিল, এবং এর চারদিকের প্লটগুলো এখনো মিক্স ইউসড হিসেবে রয়ে গেছে। এর প্রভাব সঙ্গত কারণেই পড়েছে এই ভবনের বহির্ভাগ এবং অভ্যন্তরীণ ব্যবস্থাপনায়। ঠিক একারনেই ক্যাম্পাসটির ডিজাইন হয়ে উঠেছে অর্ন্তমূখী, ক্যাম্পাসের সব কার্যক্রম আবর্তিত কেন্দ্রীয় ক্যাম্পাসকে ঘিরেই। ক্যাম্পাস ডিজাইনের মূলনীতিটি ছিলো – একটি কেন্দ্রীয় নিউক্লিয়াস স্পেস তৈরি করা, যেটি হতে ওপরের দিকে বিভিন্ন লেভেলে ক্যাম্পাসের সকল র্কাযক্রম প্রসারতি হব। কেন্দ্রীয় ভয়েডটি বিভিন্ন লেভেলে বিভিন্ন মাত্রার স্পেস তৈরি করার মাধ্যমে পুরো ক্যাম্পাসকে একত্র করে বিশ্ববিদ্যালয়ের ১২,০০০ শিক্ষার্থীর জন্য (প্রায়)।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের ভেতর একটি ড্রাইভওয়ে, একটি বসার ব্যবস্থা রয়েছে এবং একটি ছোট বাগানও রয়েছে। মূল প্রবেশপথ দিয়ে ঢোকার পরই শিক্ষার্থীরা চলে আসে মাঝের জায়গাটায়, যেখানে ওপর থেকে আলো প্রবেশ করে এবং ভবনের বিভিন্ন তলায় শিক্ষার্থীদের প্রাণবন্ত উপস্থিতি দেখা যায়। কেন্দ্রীয় বর্গাকৃতির চত্বরটি শিক্ষার্থীদের কার্যকলাপের একটি কেন্দ্রবিন্দু হিসেবে কাজ করে। ক্লাসরুম এবং অন্যান্য ফর্মাল স্পেসগুলো এই কেন্দ্রীয় স্থানটির চারপাশে সাজানো হয়েছে, যেন শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসের মূল স্পেসটির সাথে সবসময়ই সংযুক্ত থাকতে পারে।

04. Lofty Entrance

ছবি: সুউচ্চ প্রবেশপথ

06. Multiple Layers of Spaces in Atrium Creating Student Engagements

ছবি: এট্রিয়ামের ভেতর বিভিন্ন স্পেস

08. Layers of Spaces

ছবি: এট্রিয়ামের ভেতর বিভিন্ন স্পেস

05. Entrance and the Atrium

ছবি: এট্রিয়ামের প্রবেশপথ

13. the Red Brick Wall With Windows Ensuring Enough Daylights in the Depth of the Building

ছবি: লাল ইটের প্রাচীর

11. Layers of Spaces

ছবি: প্রশস্ত ব্রীজ

07. Wide Corridors Ensuring Proper Circulation and Gathering Spaces

ছবি: প্রশস্ত করিডোর

12. Arcticulated Spaces for Circulation and Informal Student Activities

ছবি: প্রশস্ত ব্রীজ

সাধারণত একটি বিশ্ববিদ্যালয় বলতে একটি বড় এলাকা মাথায় আসে। ছোট জায়গায় একটি বিশ্ববিদ্যালয় নির্মিত হলে অযাচিতভাবেই মাথায় ধারণা চলে আসে – পুরো জায়গা জুড়ে ক্লাসরুম, অফিস কক্ষ এবং অন্যান্য বেসিক ফাংশনগুলো বানানো হয়েছে। তবে সাউথইস্ট ইউনিভার্সিটির ভার্টিক্যাল ক্যাম্পাসের সবচেয়ে আর্কষণীয় বিষয়টি হলো, ভার্টিক্যাল ক্যাম্পাস ডিজাইনে শিক্ষার্থীদের জন্য ফর্মাল রুমের পাশাপাশি ইনফর্মাল বিভিন্ন স্পেসও রয়েছে, যেখানে ফর্মাল রুমগুলোর সাথে সাথে ইনফর্মাল স্পেসগুলোকেও সমান গুরুত্ব দেয়া হয়েছে শিক্ষার্থীদের মনস্তাত্ত্বিক বিকাশের জন্য। করিডোর, ব্রীজ এবং টেরাসগুলো সুন্দরভাবে একত্রিত করা হয়েছে ডিজাইনের উল্লেখযোগ্য অংশ হিসেবে।

সাউথইস্ট ইউনিভার্সিটির ভার্টিক্যাল ক্যাম্পাসে মোট ৮টি বিভাগ রয়েছে। ক্লাসরুম সংখ্যা মোট ১০৫টি এবং ল্যাব সংখ্যা ৩২টি। প্রথম দুই ফ্লোরে আনুষঙ্গিক ফাংশনগুলো ডিজাইন করা হয়েছে –

গ্রাউন্ড ফ্লোর – অ্যাডমিশন অফিস, স্টুডেন্ট এবং গেস্ট ওয়েটিং, ওয়েটিং লাউঞ্জ এবং গ্যালারি, ক্যাফেটেরিয়া, বুক স্টোর, টিচার্স লাউঞ্জ ইত্যাদি।

ফার্স্ট ফ্লোর – লবি, ওয়েটিং লাউঞ্জ, কনফারেন্স রুম, স্টোর, অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ অফিস ইত্যাদি।

1. Ground Floor Plan

ছবি: গ্রাউন্ড ফ্লোর প্ল্যান

2. 1st Floor Plan

ছবি: ফার্স্ট ফ্লোর প্ল্যান

3. 2nd Floor Plan

ছবি: সেকেন্ড ফ্লোর প্ল্যান

7. 8th Floor Plan

ছবি: অষ্টম ফ্লোর প্ল্যান

8. 9th Floor Plan

ছবি: নবম ফ্লোর প্ল্যান

সেকেন্ড ফ্লোর থেকে মূলত ক্লাসরুমগুলো ডিজাইন করা হয়েছে। শিক্ষার্থীদের প্রাণবন্ত আনাগোনা দেখা যায় বারান্দাগুলোয় এবং টেরাসে। মাঝামাঝি তৈরি করা ব্রিজ, যেগুলো বিল্ডিংয়ের একপাশ হতে অন্যপাশে সংযোগ তৈরি করে, সেসব জায়গাই মূলত এই ক্যাম্পাসের প্রাণ।

Section Aa

ছবি: ছেদচিত্র AA

Section Bb

ছবি: ছেদচিত্র BB

North Elevation

ছবি: উত্তর দিকের এলিভেশন

West Elevation

ছবি: পশ্চিম দিকের এলিভেশন

অন্যান্য সবকছিুর মত উচ্চশিক্ষার ব্যয়ভারও বেড়ে চলেছে হু হু করে। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ের সামগ্রিক ব্যয়ভার যদি কমিয়ে আনা যায়, তাহলে মাথাপিছু এই টিউশন ফি ও বেশ খানিকটা কমে আসে। ঠিক একারণেই প্রকল্পটির শুরু থেকে ‘কিউব-ইনসাইড'-এর উদ্দেশ্য ছিল এমন একটি ডিজাইন করা, যা সম্পূর্ণ স্থানীয় প্রযুক্তি ও নির্মাণ উপকরন ব্যবহার করে তৈরি করা যায়। ফলশ্রুতিতে, নির্মাণ ব্যয় এবং রক্ষনাবেক্ষন ব্যয় দুটোই কমে আসে খুব উল্লখেযোগ্য পরিমাণে। এখানে এমনভাবে ডিজাইনটি করা হয়েছে, যাতে পুরো ভবনের সবচেয়ে ভেতরের স্পেসও প্রাকৃতিক আলোয় আলোকিত হয়ে থাকে। ফলে অতিরিক্ত আলোকসজ্জার সরঞ্জাম ও বিদ্যুত খরচ কমে গিয়েছে। একই সাথে পুরো ভবনের সামগ্রিক তাপমাত্রাও যেন কম থাকে, সেই ব্যবস্থা করা হয়েছে ডিজাইনে, যা মাত্রাতিরিক্ত শীতাতপ নিয়ন্ত্রণের অযাচিত খরচের তালিকায় চালিয়েছে কাঁচি। 

সাউথইস্ট ইউনিভার্সিটির ক্যাম্পাসের সবচেয়ে বড় সুবিধা হলো এর সাইটটি উত্তরমুখী। উত্তর দিক থেকে বিল্ডিংয়ে বৃষ্টির পানি প্রবেশের সম্ভাবনা কম এবং উত্তর দিক থেকে তাপ কম অনুভূত হবে, ফলে এর উত্তরের সম্মুখভাগে একাধিক ভয়েড স্পেস রাখা হয়েছে। এই ভয়েডগুলো একটি সুন্দর বায়ু সঞ্চালনের ব্যবস্থা করার মাধ্যমে কেন্দ্রীয় স্পেসটির সাথে সংযুক্ত থাকে। শুধুমাত্র ক্লাসরুমগুলো শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত, তবে সমস্ত হলওয়ে এবং অন্যান্য স্থানগুলোয় প্রাকৃতিকভাবে বায়ু চলাচল করে। হলওয়ের শেষ মাথায় কেসমেন্ট জানালাগুলোর মধ্য দিয়ে সহজে বায়ু চলাচল করতে পারে। একটি ডাবল-গ্লেজড লেমিনেটেড কাঁচের ছাদ পুরো ক্যাম্পাসকে প্রাকৃতিক আলোয় আলোকিত করে এবং কার্যকরভাবে তাপ সঞ্চালন কমিয়ে দেয়, ফলে ভবনের মধ্যে একটি আরামদায়ক পরিবেশ নিশ্চিত হয়।

10. Brlliantly Daylit Atrium

মূল প্রবেশপথ হতে ক্যাম্পাসের ভেতরে বামদিকে একটি প্রাচীর রয়েছে, যা কিছু বর্গাকার সমান আকারের পাঞ্চ দ্বারা নির্মিত। প্রাকৃতিক আলো এ প্রাচীরের পাঞ্চগুলোর মাধ্যমে ক্লাসরুমগুলোতে প্রবশে করে। এ প্রাচীরটি ক্যাম্পাসের স্থাপত্যকে আরও আর্কষণীয় করে তোলে। ক্যাম্পাসের সামনের দিকের লিফটগুলো বিল্ডিংয়ের নয়টি তলায় অ্যাক্সেস দেয়। এই ফ্লোরগুলোর মধ্যে কয়েকটিতে শিক্ষার্থীদের একসাথে বসে তথ্যবহুল আলোচনা করার জন্য নির্দিষ্ট স্পেস রয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশস্ত গ্রন্থাগারটি আট তলায় অবস্থিত। গ্রন্থাগারের ভেতর একটি আলোচনা কক্ষ এবং একটি ই-লাইব্রেরিও রয়েছে। নবম তলায় একটি মাল্টিপারপাস হলরুম বা অডিটোরিয়াম রয়েছে। নির্মাণ প্রক্রিয়া দ্রুত সম্পন্ন করতে একটি কংক্রিট স্ল্যাবসহ স্টিল স্ট্রাকচারের ফ্রেমিং সিস্টেম বিবেচনা করা হয়েছে। প্রধান কাঠামোগত উপাদান স্টিল এবং কংক্রিট, যেখানে ভার্টিক্যাল স্টিল মেম্বারগুলো ইট এবং কংক্রিটের প্রাচীর দিয়ে আচ্ছাদিত করা হয়। বাইরের সার্ফেসটি লাল রঙের এক্সপোস্ড ইট দ্বারা আবৃত থাকে যাতে ফর্মের মৌলিকতা বজায় থাকে। ভেতরের সার্কুলেশন এবং কমন স্পেসগুলো এক্সপোস্ড ইট দ্বারা আবৃত। ক্লাসরুমগুলোতে একটি সাদা রঙের স্কিম রাখা হয় মূলত একটি মৌলিক পড়ার পরিবেশ তৈরি করার জন্য।

সব অস্থায়ী ক্যাম্পাসকে একটি স্থায়ী ঠিকানায় স্থানান্তর করার কিছু সরকারি নির্দেশিকা থাকে। বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক কার্যক্রমকে মিটমাট করার জন্য স্বল্প সময়ের মধ্যে প্রকল্পটি নির্মাণ করা চ্যালেঞ্জিং ছিল। সে কারণে কাঠামোগত ব্যবস্থার মূল সিদ্ধান্ত ছিল একটি স্টিলের প্রিফেব্রিকেটেড কাঠামো তৈরি করা, যা একই আয়তনের একটি কংক্রিটের কাঠামোর তুলনায় নির্মিত হতে যথেষ্ট কম সময় নিয়েছে। কলাম বীম এবং ফ্লোর প্লেটটি একক বেসমেন্টের নীচে একটি কংক্রিট বেস সহ একটি স্টিলের উপাদান দ্বারা সাপোর্ট দেয়া। স্টিল বিম এবং সাব বিম দ্বারা সাপোর্টেড ধাতব ডেকিং শীটের উপরে ফ্লোর প্লেটগুলি ঢালাই করা হয়েছে। পরবর্তীতে মেঝেগুলি কংক্রিট ফিনিশের সমজাতীয় ম্যাট ফ্লোর টাইলস দিয়ে শেষ করা হয়েছে যাতে এর ছিঁড়ে যাওয়া রোধ করা যায়। ক্যাম্পাসের ভেতরের ভার্টিক্যাল দেয়ালগুলোর স্টিল স্ট্রাকচার ইট দিয়ে ঢেকে তৈরি করা হয়েছে, যা আবহাওয়া সুরক্ষা নিশ্চিত করে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসের মতো প্রাতিষ্ঠানিক ভবনে একটি উষ্ণ, প্রাণবন্ত এবং কম রক্ষণাবেক্ষণ-নির্ভর সার্ফেস তৈরি করতে এই ইটের দেয়ালগুলিকে লাল ক্ল্যাডিং ইট দিয়ে আবৃত করা হয়েছে। শ্রেণীকক্ষের অভ্যন্তরে দিনের আলোর শক্তিশালীকরণ নিশ্চিত করার জন্য সাদা রং দিয়ে প্লাস্টার করা হয়েছে।

15. the Central Void Is the Life of the Building14. the Atrium

সিঁড়ি, ভয়েড এবং কেন্দ্রীয় স্পেস সহ সকল সার্কুলেশনে সম্পূর্ণরূপে প্রাকৃতিকভাবে প্রচুর বায়ুচলাচল করে। শ্রেণীকক্ষের ভেতর যেকোন জরুরী পরিস্থিতিতে বায়ুচলাচল নিশ্চিত করার জন্য প্রতিটি জানালার প্রতিটি প্রয়োজনীয় জায়গায় প্যানেল সহ ওপেনিংগুলো স্বচ্ছ গ্লেজিং দ্বারা আবৃত, কারণ শ্রেণীকক্ষ, ল্যাব, অফিস, পরীক্ষার হলগুলি ভিআরএফ সিস্টেমের সাথে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত। কিছু আবদ্ধ জায়গা ছাড়া সকল খোলা স্থানে সার্ভিস ডাক্ট এবং ক্যাবল ট্রে দ্বারা তৈরি মেটাল সিলিংকে কোনো ফল্স/ড্রপ সিলিং ছাড়াই ডিজাইন করা হয়েছে এবং যথেস্ট পরিমাণে লাইটের ব্যবস্থা করা হয়েছে। সেন্ট্রাল কোর্ট স্যান্ডউইচড এবং লেমিনেটেড টেম্পারড গ্লাস দিয়ে আচ্ছাদিত করা হয়েছে যাতে পরিমিত পরিমাণে আলো প্রবেশ করে এবং তাপ ও ​​বৃষ্টি থেকে কোর্টটি সুরক্ষিত থাকে। নির্মাণ খরচ কমাতে পছন্দসই টেক্সচার সহ ইটের দেওয়ালে প্লাস্টার করা পৃষ্ঠের উপর সিমেন্ট পেইন্ট দিয়ে আবৃত করা হয়েছে।

একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র, শিক্ষক এবং প্রতিষ্ঠানের মধ্যে একটি অর্থপূর্ণ সম্পর্ক এবং সংযোগ গড়ে তোলার জন্যে একটি অদৃশ্য যোগসূত্র প্রয়োজন এবং স্থাপত্যই হতে পারে সেই কার্যকরী যোগসূত্র  - এই মূলমন্ত্রটিই ’কিউব-ইনসাইড’কে সাইথইস্ট ইউনিভার্সিটির ক্যাম্পাস ভবনটিকে একটি সফল ও অনুপ্রেরণামূলক প্রতিষ্ঠান হিসেবে ডিজাইন করার তাগিদ যুগিয়েছে। ফলাফল - এই শহর পেয়েছে একটি অনবদ্য স্থাপত্য কর্ম।

 20. Aerial View 

সম্পাদনায়: স্থপতি ফাইজা ফাইরুজ

আপনার মতামত দিন

কমেন্ট

User Image

Md. Shamsuzzan

২১ আগস্ট, ২০২৪

খুব সুন্দর।

Logo
Logo
© 2024 Copyrights by Sthapattya o Nirman. All Rights Reserved. Developed by Deshi Inc.