শিকড় - অনুপস্থিতির উপস্থিতি (স্যার জগদীশ চন্দ্র বসু বৈজ্ঞানিক গবেষণা কেন্দ্র)

স্থাপত্য ও নির্মাণ
শিক্ষার্থীদের প্রকল্প
৪ মার্চ, ২০২৪
১৯৫
শিকড় - অনুপস্থিতির উপস্থিতি (স্যার জগদীশ চন্দ্র বসু বৈজ্ঞানিক গবেষণা কেন্দ্র)

প্রকল্পের শিরোনামশিকড় - অনুপস্থিতির উপস্থিতি (স্যার জগদীশ চন্দ্র বসু বৈজ্ঞানিক গবেষণা কেন্দ্র)

প্রকল্পের স্থান : রাঢ়ীখাল, মুন্সিগঞ্জ, বাংলাদেশ

শিক্ষার্থীর নাম : বাঁধন দাশ

প্রকল্পের বছর : ২০২৩

স্টুডিও সুপারভাইজার : . আবু সাঈদ মোশতাক আহমেদ, জিয়াউল ইসলাম, নাবিলা ফেরদৌসী, প্রণয় চৌধুরী শুভ

বিভাগীয় প্রধান : . নবনীতা ইসলাম

বিশ্ববিদ্যালয় : ইউনিভার্সিটি অফ এশিয়া প্যাসিফিক

Student Photo

স্যার জগদীশ চন্দ্র বসু একজন বিখ্যাত বাঙালি বিজ্ঞানী যার জন্মস্থান বাংলাদেশের মুন্সিগঞ্জে। তিনি পদার্থবিজ্ঞান উদ্ভিদবিজ্ঞানে অসাধারণ অবদান রাখেন। তিনি ইলেক্ট্রম্যাগনেটিক রেডিয়েশন আবিষ্কার করেন যেটা এখনকার সময়ে 5জি হিসেবে ব্যহহৃত হচ্ছে, তিনি প্রথম প্রমাণ করেন গাছের প্রাণ আছে। মুন্সিগঞ্জে তাঁর পৈত্রিক বাড়িটি বহু বছর ধরে অবহেলিত হয়ে আসছে। তাঁকে তাঁর জন্মস্থানে পর্যাপ্ত সম্মান প্রদর্শন করা হয়নি। স্যার জগদীশ চন্দ্র বসুর বাড়ীকে সংরক্ষণের মাধ্যমে, উদ্ভিদবিজ্ঞান জাদুঘর এবং উদ্ভিদ গবেষণা কেন্দ্র প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে বিশ্ব দরবারে তুলে ধরাই প্রজেক্টের উদ্দেশ্য। 

 

1 Sir Jagadish Chandra Bose Inventions

ছবি - স্যার জগদীশ চন্দ্র বসুর আবিষ্কার

 
 

2 Sir Jagadish Chandra Bose Chronology

ছবি - স্যার জগদীশ চন্দ্র বসুর কালক্রম

 

এছাড়াও বর্তমান সময়ে গ্লোবাল ইনোভেশন ইনডেক্স থেকে জানা যায় বাংলাদেশের অবস্থান  গবেষণার দিক থেকে অনেক পিছিয়ে আছে, যার কারন হতে পারে গবেষণাগারের যথাযথ ব্যবস্থা না থাকা। 

এই প্রজেক্টের আরেকটি উদ্দেশ্য ২১ শতাব্দীর গবেষণাগারের স্থাপত্য কেমন হতে পারে তা দেখা। স্যার জগদীশ চন্দ্র বসু তখনকার সময়ে গ্রামীণ পরিবেশ থেকে  বিশ্বজুড়ে আলোড়ন তৈরি করতে পেরেছেন তাহলে এখনকার প্রযুক্তির যুগে বাংলাদেশের অবস্থান পিছিয়ে থাকতে পারে না। তাই ভবিষ্যতের বিজ্ঞানীদের জন্য স্যার জগদীশ চন্দ্র বসুর জন্মস্থানটি অনুপ্রেরণার জায়গা হতে পারে। 

3 Bangladesh Position on Global Innovation Index

ছবি - গ্লোবাল ইনোভেশন ইনডেক্স চার্টে বাংলাদেশের অবস্থান

সুতরাং, স্যার জগদীশ চন্দ্র বসুর জন্মস্থান, যেখানে তাঁর শিকড়ের সূচনা ঘটেছিলো সেখানেই প্রজেক্টটি শুরু হয়। এর মাধ্যমে স্যার জগদীশ চন্দ্র বসুকে যথাযথ সম্মান প্রদর্শন করা যেতে পারে, বাংলাদেশের গবেষণাগারের অবকাঠামো উন্নয়ন হতে পারে এবং পুরো প্রজেক্টটি স্যার জগদীশ চন্দ্র বসু মিউজিয়াম গবেষণাগারের মাধ্যমে ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে অনুপ্রাণিত করবে।

 

4 Site Existing Building Timeline

ছবি - সাইটে উপস্থিত স্থাপত্যের সময়সীমা

 

সাইট বিশ্লেষণ:

সাইটটি বাংলাদেশের মুন্সিগঞ্জে রাঢ়ীখাল নামক জায়গায় অবস্থিত। সাইট এরিয়া ১৩. একর। সাইটে অবস্থিত স্যার জগদীশ চন্দ্র বসু স্কুল এবং কলেজ ভবনটি পাশের জমিতে নতুনভাবে নির্মাণ করা হচ্ছে।  এছাড়াও সাইটে পুরাতন ভবন আছে যা সুরুযাবালা সাহা ভবন নামে পরিচিত যেটি সুরুযাবালা সাহা নিজে স্যার জগদীশ চন্দ্র বসু কমিটিকে দান করে দেশান্তরী হন। এটি বর্তমানে শিক্ষকদের আবাসন হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। সাইটটি টি পুকুর দিয়ে ঘেরা এবং এখানে অসংখ্য পুরাতন গাছ রয়েছে। গাছগুলো চিহ্নিত করি যেহেতু উদ্ভিদ গবেষনার জন্য গাছের উপস্থিতি খুবই জরুরি।  সাইটটি আড়িয়াল বিল জোনের মধ্যে পড়েছে তাই পানির লেভেলকে বিবেচনায় রেখে ডিজাইন করা হয়েছে।

 

5 Site Images

ছবি - সাইটের ছবি

 

6 Site Existing Section

ছবি - বিদ্যমান সাইটের ছেদচিত্র

কনসেপ্ট:

 

কনসেপ্টটি দুইটি বিষয়ের উপর ভিওি করে ভাবা হয়েছে। প্রথমটি স্যার জগদীশ চন্দ্র বসুর আদর্শ এবং দ্বিতীয়টি সাইট ভিওিক। 

·         স্যার জগদীশ চন্দ্র বসুর বিভিন্ন বই থেকে জানা যায়, জীবিত এবং নির্জীব এর মধ্যে সহাবস্থান। 

·         তাঁর আদর্শকে প্রতিফলিত করে যা পরবর্তী বাকি জীবনে তাঁর বিভিন্ন আবিষ্কারের মাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। 

·         সাইটি যেহেতু বন্যাপ্রবণ এলাকা তাই মাটির নিচে কোনো নির্মাণ না করে বরং বসুর বাড়ীটিকে হাইলাইট করার জন্য এর পিছনে মিউজিয়ামটি একটি সবুজে ঘেরা ব্যাকড্রপ হিসেবে চিন্তা করা হয়েছে।

·         সুরুযাবালা ভবনটি যেহেতু বাংলার পুরনো উঠান বাড়ীগুলোর ধারনা বহন করে তাই পাবলিক ব্যবহারের জন্য উন্মুক্ত হতে পারে। 

 

·         মুন্সিগঞ্জের লোকার বাড়ি স্টাডি করে জানা যায়, বাড়িগুলো এলিভেটেড হওয়াতে ওই জায়গার জীববৈচিত্র্য সংরক্ষিত হয় অপরদিকে বসুর বাড়ীর সম্মুখভাগকে সলিড ভয়েডে ভাগ করে নতুন এক ধরনের স্থাপত্য হতে পারে। 

 

·         এছাড়াও এই প্রজেক্টে ল্যাব এক্সপেরিমেন্টাল প্লান্ট এক্সিবিশন থাকতে পারে যেখানে গাছের নিজস্ব ওয়েভকে একটি ডিভাইসের মাধ্যমে ইউজাররা বিভিন্ন সুরে শুনতে পারবে। গাছের প্রাণের স্পন্দন অনুভব করতে পারবে এবং গাছ সম্পর্কে আরো জ্ঞান অর্জন করতে পারবে। 

8 Concept

ছবি- কনসেপ্ট 

 

9 Master Plan

ছবি- মাস্টারপ্ল্যান

 

11 Museum Block

ছবি- মিউজিয়াম ব্লক

16 Cafe Block

ছবি- ক্যাফে ব্লক

19 Lab Block

ছবি- ল্যাব ব্লক

22 Accommodation Block

ছবি- বাসস্থান ব্লক

প্রজেক্টটিতে পূর্বদিকের জায়গাটি গবেষকদের জোন, এখানে তাদের ইনডোর এবং আউটডোর গবেষণার কাজ করতে পারবে। পশ্চিমদিকের জায়গাটি পাবলিক জোন যেখানে উদ্ভিদ সম্পর্কে জানতে পারবে এবং গাছ রোপণ করে যেতে পারবে যা এখনকার সময়ে গাছকে প্রাধান্য দেয়ার বিষয়টি উপলব্ধি করতে পারবে। সাইটে উপস্থিত থাকা প্রাকৃতিক উপাদানগুলোকে যথাসম্ভব পুননির্মাণ কম করার চেষ্টা করা হয়েছে। উপস্থিত থাকা জীববৈচিএ্যকে  আরও সমৃদ্ধ করার চেষ্টা করা হয়েছে যা সাধারন মানুষদের এবং গবেষকদের কাছে স্মরণীয় হয়ে থাকতে পারে।

 

12 Museum Blow up South Elevation

ছবি- মিউজিয়াম-এর দক্ষিণ দিকের এলিভেশন

14 Museum Section Bb'

ছবি- মিউজিয়াম-এর ছেদচিত্র BB'

 
 

17 Cafe Section Cc'

ছবি- ক্যাফে-এর ছেদচিত্র CC'

20 Lab Section Dd'

ছবি- ল্যাব-এর ছেদচিত্র DD'

 

15 Museum Birds Eye View

ছবি- মিউজিয়াম-এর বার্ডস আই ভিউ

18 Cafe Birds Eye View

ছবি- ক্যাফে-এর বার্ডস আই ভিউ

21 Lab Birds Eye View

ছবি- ল্যাব-এর বার্ডস আই ভিউ

23 Accommodation Birds Eye View

ছবি- বাসস্থান-এর বার্ডস আই ভিউ

জুরি মন্তব্য:

পুরানো স্থাপত্যকে প্রাধান্য দেয়া হয়েছে, নতুন বিল্ডিং গুলো কনটেম্পোরারি মনে হচ্ছে যেটা সাইটের ইকোলজির সাথে ব্লেন্ড করেছে। পুরো সাইটের ইকোলজিকাল ভারসাম্যের কথা মাথায় রেখে ডিজাইন করা হয়েছে। নীল এবং সবুজকে ঘিরে যে স্থাপত্য ডিজাইন করা হয়েছে তা স্যার জগদীশ চন্দ্র বসুর আদর্শকে ধারন করেছে। ডিজাইনে উভচর স্থাপত্যের ধারণা পাওয়া যাচ্ছে। এছাড়াও ম্যাটেরিয়াল সিলেকশনেও যথেষ্ট সেন্সিটিভিটি আছে। নতুন বিল্ডিং ব্লকগুলো এমনভাবে বসানো হয়েছে যাতে স্পেস গুলো বেস্ট ভিউ পায়, যেমন একোমোডেশন ব্লকটিকে অলমোস্ট রিসোর্ট এর মতো করে ডিজাইন করা হয়েছে।

25 Museum View 1

ছবি- মিউজিয়াম ভিউ ১

26 Museum View 2

ছবি- মিউজিয়াম ভিউ ২

27 Museum View 3

ছবি- মিউজিয়াম ভিউ ৩

28 Lab View 1

ছবি- ল্যাব ভিউ ১

29 Lab View 2

ছবি- ল্যাব ভিউ ২

30 Cafe View

ছবি- ক্যাফে ভিউ 

 

24 Axonometric View

ছবি- এক্সোনোমেট্রিক ভিউ

 
সম্পাদনায়: স্থপতি ফাইজা ফাইরুজ

 

আপনার মতামত দিন

কমেন্ট

User Image

নূশরাত জাহান নিশি

১০ মার্চ, ২০২৪

অনেক সুন্দরভাবে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে,অসাধারণ।

Logo
Logo
© 2024 Copyrights by Sthapattya o Nirman. All Rights Reserved. Developed by Deshi Inc.