স্থপতি রেজাউল কবিরের সাথে স্থপতি বশিরুল হকের এই সাক্ষাতকারটি 'স্থাপত্য ও নির্মাণ' পত্রিকার ৩য় সংখ্যায় (জুলাই-সেপ্টেম্বর, ১৯৯২) ছাপা হয়েছিল, স্থাপত্য পেশার আলোকে আলোচনার বহুলাংশ এখনও সমভাবে প্রাসঙ্গিক। সাক্ষাতকারটি সকলের জন্য বর্তমান ওয়েব ফরম্যাটে থাকাটা গুরুত্বপূর্ণ। স্থপতি বশিরুল হকের চিন্তাধারার স্বারক হিসাবেও এই সংগ্রহটি অনেকের কাছে আকর্ষনীয় হবে বলে মনে করি।
একজন স্থপতি প্রভাবান্বিত করে ভবনকে আর ভবন প্রভাবান্বিত করে মানুষকে। প্রকৃত পক্ষে স্থাপত্য ও পরিবেশ নিয়ন্ত্রণ করে মানুষের জীবনধারা। আর এই পরিবেশ তৈরিতে স্থপতিদের ভূমিকা অনন্য সাধারণ। বাংলাদেশের স্থাপত্যাঙ্গনে এমনই একজন সক্রিয় ব্যক্তিত্ব স্থপতি বশিরুল হক। সৃষ্টিশীলতা ও নিজস্ব একটি ধারার বৈশিষ্ট্যে অনন্য এই স্থপতি নিরলসভাবে কাজ করে চলেছেন সেই ১৯৭৭ থেকে। |
স্থাপত্যাঙ্গনে জনাব বশিরুল হকের যাত্রা শুরু হয় ১৯৬৪ সনে যখন তিনি লাহোরের ন্যাশনাল কলেজ অব আর্টস থেকে স্থাপত্য বিষয়ে ডিগ্রী অর্জন করেন এবং পরবর্তীতে ১৯৭৫ সনে তিনি নিউমেক্সিকো বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এম,আর্ক ডিগ্রী করেন সাফল্যের সাথে। সেখানে তিনি টিচিং এসিসট্যান্ট হিসাবে কিছুদিন কাজ করেন। ১৯৮৯ তে তাকে ম্যাসাচুসেট্স ইনষ্টিটিউট অফ টেকনোলজি কেমব্রীজে সমালোচক হিসাবে আমন্ত্রণ জানায়। নিজ প্রচেষ্টায় ব্যক্তিগত প্রতিষ্ঠান ‘বশিরুল হক এণ্ড এসোসিয়েট্স লিঃ’ গড়ে তোলেন এবং ১৯৭৭ সন থেকে আজ অবধি সেখানে অত্যন্ত নিষ্ঠা ও আন্তরিকতার সাথে কাজ করে চলেছেন তিনি। |
ছবি : স্থপতি বশিরুল হক |
প্রথিতযশা স্থপতি জনাব বশিরুল হকের সাথে আমার একান্ত সাক্ষাৎকারটি স্থাপত্য শিল্প চর্চায় তাঁর অসামান্য অভিজ্ঞতা বর্তমান ও ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য মূল্যবান অবদান রাখবে বলে আমার প্রত্যাশা। রেজাউল কবির: আপনি কিভাবে স্থাপত্য পেশার সাথে নিজেকে জড়িত করলেন? বশিরুল হক: আমি যে Architecture এর সাথে জড়িত হয়েছি, এর একটা Background আছে। ঢাকা কলেজে যখন পড়তাম তখন USIS library-তে যেতাম, তখন ‘ইউসিস' তোপখানা রোডে। একদিন Architecture Section এর দিকে নজর গেল, আসলে আর্কিটেকচার কি তা আগে জানতাম না, কিছু বই ঘাটতে লাগলাম, মনে হল, এটাই তো আমার পেশা, আমি আর্কিটেকচার করতে চাই, তখন Architecture শিক্ষাক্রম এখানে শুরু হয়নি। সপ্তাহ খানেকের মধ্যেই খবরের কাগজে এ বিষয়ে বিজ্ঞাপন এল, লাহোরের National College of Arts - এ কতগুলি স্কলারশীপ দিবে। আমি দরখাস্ত করলাম এবং হোটেল শাহবাগে Principal Dr. Sponenberg ইন্টারভিউ নিলেন। আমি ভর্তির সুযোগ পেলাম। আমি লিখলাম স্কলারশীপ না পেলে আমি পড়তে পারব না, তার দিন ১৫ পরে ওরা আমাকে জানাল তোমাকে স্কলারশীপ দেয়া হবে এবং টিকেট পাঠাচ্ছি। গেলাম সেখানে। তখন ওখানে Architecture, Painting, Ceramics, photography এই সব dept. ছিল, প্রথম দুই বছরকে ওরা বলত Common courses। সকলের জন্য একই, সেখানে Free hand drawings-এর উপরে জোর দেয়া হত। যারা Painting. ceramics, Sculpture শিখবে, তাদের সাথে আমিও Life model থেকে free hand sketch করতাম। দু' বছরের পরে আমি combined ক্লাসের দ্বিতীয় স্থানে চলে এলাম। Curriculum-এর দিক থেকে এটি Bahouse এর কাছাকাছি ছিল, সব মিলিয়ে Intermediate এ I was assessed as the best student। এর পরে ৩ বছর Architecture এর Course। কয়েকজন শিক্ষকের প্রভাব আমাকে এসময়ে বেশ প্রভাবিত করেছে। একজন হলেন অধ্যাপক বলডিংগার, ফুলব্রাইট অধ্যাপক, অরেগণ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এসেছিলেন ভদ্রলোক। উনি History of Art and Architecture পড়াতেন। ওনার পড়ানোর পদ্ধতি ভিন্নতর ছিল। উনি সব সময় নিজেই Slide তৈরী করতেন। India-র উপরে যখন তিনি পড়ালেন, তখন তিনি নিজে ভারতে গেলেন, Slide তৈরী করলেন এবং আমাদের পড়ালেন। আরেকজন Architecture পড়াতেন Professor Harold Benson ইনিও ফুলব্রাইট স্কলার। আমাদের ২ বছর পড়িয়েছেন। উনি একটু পড়ুয়া ধরনের মানুষ ছিলেন, এই ভদ্রলোক আমার জীবনে বার বার ফিরে এসেছেন। পাশ করার পর আমি ঢাকায় এলাম, কয়েকটি Architectural firm এ কাজ করলাম। তারপর আরও পড়াশুনার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের শিকাগোতে পাড়ি জমালাম, আই· আই· টি তে পড়বার জন্য। Prof. Harold Benson এর সাথে যোগাযোগ করলে তিনি নিউ মেক্সিকো বিশ্ববিদ্যালয়ে যাবার পরামর্শ দিলেন। উনি ভর্তির ব্যবস্থা করেছিলেন। যদিও তখন সময় পার হয়ে গিয়েছিল। তখন '৭১-এর জানুয়ারী, তিনি তাঁর অফিসে কাজ করার ব্যবস্থাও করেছিলেন। আমি ডঃ এফ. আর- খান-এর সাথে বেশ ঘনিষ্ঠ ছিলাম, সত্যি কথা বলতে কি উনি আমাকে পড়াশুনার জন্য কিছু আর্থিক সাহায্যও করেছিলেন, ডঃ এফ. আর.খান আমাকে বললেন, তুমি যদি SOM এ কাজ করতে চাও তাহলে আমি তোমার Interview-এর ব্যবস্থা করতে পারি। আমাকে প্রথমে SOM-এর ৩ জন পার্টনার ইন্টারভিউ নিলেন, পরে এফ- আর: খান আরো দু'জন পার্টনারের সাথে Interview-এর কথা বললেন, এগুলি আমার আসলে Hard মনে হল, এবং আমার মনে হচ্ছিল ওরা অতটা আগ্রহী নন আমাকে নেবার ব্যাপারে। তখন আল্লাই জানেন আমার কি হলো আমি ইন্টারভিউ এর তৃতীয় দিনে বাংলাদেশের একটা টিকেট কিনে ফেললাম, সন্ধ্যায় ডঃ খানের সাথে দেখা করে বললাম সে কথা, শুনে তিনি বললেন, Don't be silly, দেখ, আমি ইচ্ছা করলেই তোমাকে নিতে পারি। আমার যথেষ্ট প্রভাব আছে, কিন্তু আমি চাইছি যে, ওরাই বলুক। আমি বললাম আমি দেশেই ফিরতে চাই, তখন তিনি বললেন ঠিক আছে, আমিই তোমাকে আরেক সময় দেশে ফিরতে বলেছিলাম, জানিনা আজকে কেন আমি অন্যরকম বলছি, তুমি যদি সিদ্ধান্ত নিয়ে থাক তাহলে ঠিক আছে। আমি চলে এলাম এবং ঠিক করলাম আর চাকরী নয়, নিজেই ফার্ম প্রতিষ্ঠা করব। আমার সে সময় কোন পয়সাই ছিল না। পকেটে ১২০ ডলার মাত্র, তাও আবার বাবাকে দিয়ে দিলাম, তিনি তখন অবসর নিয়েছেন। একটি বাসাও দেখলাম ধানমণ্ডীতে, ভাড়া আড়াই হাজার। ঠিক সে সময়ে একজন আমাকে বললেন, আবু সাইদ চৌধুরী গুলশানে বাড়ি বানাবেন, আমি আগ্রহী হলাম, বললাম আমাকে অফিসের জন্য ছয় মাসের ভাড়া অগ্রীম দিতে হবে। এভাবেই আমি আমার অফিস শুরু করলাম। আমার মনে হয় জীবনটা আসলে অনেকগুলি ক্রমাগত ঘটনা। কারও কারও জন্য সেগুলি অনুকূল হয় কারও জন্য প্রতিকূল। আমি হয়ত তেমনি একজন ভাগ্যবান ব্যক্তি যার জন্য সব প্রতিকূলতাগুলি আপনা আপনি সমাধান হয়ে গেছে। |
ছবি : ডিজাইনরত স্থপতি |
রেজাউল কবির: আমরা জানি যে আপনি বিদেশে পড়াশুনা করেছেন এক পরিবেশে, আর এই দেশে স্থাপত্য চর্চা করছেন অন্য পরিবেশে। এই দুই-এর সমন্বয় কি করে ঘটালেন। বা আদৌ কি কোন Self-Contradiction কাজ করে? বশিরুল হক: এ প্রশ্নটা শুধুমাত্র আমাদের পেশার জন্য প্রযোজ্য নয়, এটা কিন্তু সব পেশার জন্যই প্রযোজ্য। আমাদের শিক্ষার ভিত্তিটাই অনেকটা পশ্চিম ইউরোপীয় ধাচের। শুধু আমেরিকায় নয়, আমাদের দেশে যে লেখাপড়া চলছে তার মধ্যে প্রচুর পাশ্চাত্যের প্রভাব রয়েছে। স্থাপত্যের মত সৃষ্টিশীল পেশায় এটা বেশি চোখে পড়ে। আমি যে একটা বিদ্যা আহরণ করলাম, সেটাকে আমার দেশের সাথে মিলিয়ে কিভাবে ব্যবহার করব সেটা বেশ গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার। আমি ব্যক্তিগতভাবে ছাত্রাবস্থা থেকেই ফর্ম নিয়ে কাজ করতাম, বিল্ডিংকে কিভাবে ভাস্কর্যের রূপ দেয়া যায় সেই চেষ্টা আর কি। এমনকি আমেরিকায় উচ্চশিক্ষার সময়ও আমি Form oriented Architecture করার চেষ্টা করেছি। দেশে যখন এলাম তখন মনে হলো, ঐতিহাসিকভাবে আমাদের যে নির্মাণ উপাদানটি দৃঢ়ভাবে এখনও বর্তমান, তা হলো ইট। সস্তায় বাড়ি করার জন্য আমি যদি ইটকে ভারবাহী দেয়ালের উপাদান হিসাবে ব্যবহার করি তাহলে প্রথম কাজ হবে আমার নিজের মধ্যে একটা পরিবর্তন আনা। আমি ফর্ম নিয়েই কাজ করলে চলবে না কারণ ইটের নিজস্ব সীমাবদ্ধতা আছে। ইট দিয়ে Cantilever wall করা চলে না, যেমন চলে Concrete-এর ক্ষেত্রে। ফলে আমি নিজেই আমার স্থাপত্য চিন্তায় একটা সীমাবদ্ধতা টেনে - দিলাম, ইটের জন্যেই। ইট ঐতিহাসিক উপাদান এবং ইটের বাড়ি সস্তাও বটে। এরপরে আমি ক্রমাগত ভাবছিলাম আমাদের স্থাপত্যের উৎস কি? এখানে প্রবহমানতা কোনটির,স্থপতি হিসেবে আমি কোথা থেকে শুরু করব? আমি এ অঞ্চলের ইতিহাস সম্বন্ধে পড়াশুনা করলাম। সামাজিক গঠনটা নিয়েও। বিশেষ করে আমাদের এই বাংলাদেশে কি ছিল তা জানার চেষ্টা করেছি। কতগুলি দিক আমাকে নাড়া দিল, এক, কি নির্মাণ উপাদান নিয়ে আমি কাজ করব, এবং আমি কি ধরনের পরিবেশ তৈরী করব। ইটের কাজ করতে গিয়ে কতগুলি সমস্যার সম্মুখীন হলাম, কি ভাবে আমি জানালাগুলোকে রোদ-বৃষ্টি থেকে Protect করব? আমাদের ঐতিহ্য অনুযায়ী, এমনকি মোঘলরাও জানালার উপর এক ধরনের শেড ব্যবহার করেছেন, কিন্তু আমি পাশ্চাত্য প্রভাবে সেই ঐতিহ্য ভাঙলাম, এবং জানালাগুলিকে দেয়ালের ভিতরে ঢুকিয়ে আনলাম। এভাবে আমি বিল্ডিং-এর বাইরের দেয়ালটিকে নতুন এক ধরনের রূপ দেয়া শুরু করলাম। বিল্ডিং এর অন্যান্য বহুক্ষেত্রেই, বিশেষ করে Detail - এ আমি পাশ্চাত্যের বিদ্যাকে কাজে লাগিয়েছি। এখানে একটা কথা আমি বলে রাখতে চাই যে, বর্তমান বাংলাদেশ (গুপ্ত যুগ ছাড়া) বেশির ভাগ সময়ই একটা প্রদেশ ছিল। ফলে ভারতের অন্যান্য স্থানের থেকে এখানে একটি ভিন্নতর স্থাপত্য ধারার প্রচলন ঘটেছিল। ঐ বিশেষ ধারাটিকে আমি অনুসরণ করার চেষ্টা করেছি। এই প্রাচ্য ও পাশ্চাত্য ধারাকে আমাদের পক্ষে আলাদা করা খুবই কষ্ট সাধ্য ব্যাপার কেননা আমরা ২০০ বছরের পাশ্চাত্যের ঔপনিবেশিক সংস্কৃতিতেও সম্পৃক্ত। আমাদের নির্মাণ সামগ্রীর অধিকাংশই পাশ্চাত্য প্রযুক্তির ফসল। তাই আলাদা করা যায় না, বৈপরীত্য থাকবেই। এই বৈপরীত্যের মাঝেই আমাদের নিজেদের নিজস্ব ধারা সৃষ্টি করতে হবে। |
ছবি : স্থপতির নিজের বাড়ি ও অফিস |
ছবি : স্থপতির নিজের বাড়ি ও অফিস |
রেজাউল কবির: সময়ের সাথে সাথে আপনার ডিজাইনের মৌলিক চিন্তাধারার পরিবর্তন হয়েছে। বিল্ডিং-এর ডিটেইল ডিজাইনে অনেক পরীক্ষা নিরীক্ষা চালিয়েছেন, আপনার অভিজ্ঞতার কিছুটা আমাদের পাঠকের জন্য বলুন। বশিরুল হক: আমার Concept এর বেশ পরিবর্তন এসেছে, প্রথমদিকে আমি ইটকে পুরোপুরিভাবে ভারবাহী দেয়াল হিসেবে ব্যবহার করতাম। কিন্তু এর কিছু দূর্বলতা আছে, যেমন Load bearing 10” ইটের দেয়াল, সম্পূর্ণভাবে জল নিরোধক (water proof) করা সম্ভব নয়, আবার একটা ফাঁক রেখে আরেকটা ৫”দেয়াল দিতে গেলে খুব ব্যয়বহুল হয়ে যায়। যখন ঢাকায় আমেরিকান স্কুল ডিজাইন করতে গেলাম, সেখানে দেখা গেল, অনুষ্ঠানাদির জন্য বড় হল ঘর দরকার। ইটের দেয়ালে তা করা সম্ভব হলো না দুটি কারণে। এক, কক্ষটি বড় এবং দ্বিতীয়ত, বারিধারার মাটি খারাপ। তাই আমরা Physical structureটা কলাম-বীম-স্লাব পদ্ধতিতে রেখে, ইটকে একটা Cladding উপাদানের মত ব্যবহার করলাম। এখানে ৫" ফাঁক দিয়ে Cavity wallদেয়া, ঐ ফাঁকের ভিতর যদি কোথাও পানি জমে যায় তা বের করার জন্য ফুটাও দেয়া হল। Apartment building যদি উঁচু করা হয়, সেখানে এটা করা সম্ভব, কিন্তু একটা ছোট বাড়িতে তা করতে গেলে খরচ অনেক পড়বে। একটা বিল্ডিং কমপ্লেক্স হলে আমি ইটের ভারবাহী দেয়াল না ব্যবহার করার চেষ্টা করব। বড় Complex-এ ভারবাহী ইটের দেয়াল বেশ একটা ভারী ভারী চেহারা তৈরী করে, তাই একটি হালকা অনুভূতির জন্যেও এখন আমি ইটকে non load bearing হিসাবে ব্যবহারের পক্ষপাতী। রেজাউল কবির: আপনি যে Damp সমস্যার কথা বললেন, তা কোন বিশেষ ধরনের Pointing বা অন্য কোন treatment করে সমাধান করা যাবে কি? বশিরুল হক: আমাদের বিল্ডিংগুলিতে এ পর্যন্ত তেমন কোন সমস্যা হয়নি, একটা মাত্র ক্ষেত্রে কিছু অভিযোগ পাওয়া গেছে সে হলো ইস্পাহানীর সিদ্ধেশ্বরী এপার্টমেন্ট। এরপরে আমরা যতগুলি কাজ করেছি, আমাদের খুব একটা সমস্যা হয়নি। আমরা Flash pointing করি যাতে পানিটা না দাঁড়াতে পারে, Pointing-এর উপর বিশেষ কোন treatment করছি না। তবে, লক্ষ্য করেছি, যে দিকে 10” Solid wall থাকে, বিশেষ করে পূর্ব-পশ্চিমে সেখানে কিছুটা সমস্যা দেখা দেয়। সেজন্য আমরা অনেক জায়গায় ১৫" Solid wall করেছি। কিছুটা ফলও পাওয়া গেছে। |
রেজাউল কবির: আপনি Century tower এ Prefabricated wall panel ব্যবহার করেছেন। এটা কি ইটের বদলে ভালো কাজ করবে ভাবছেন? না কি অন্য কোন কারণ আছে? আপনি নানা ধরনের Brick Bonding ব্যবহার করেছেন বিভিন্ন বিল্ডিং-এ সে সম্বন্ধেও কিছু বলবেন। বশিরুল হক: যেহেতু এটা একটা High-rise building এবং এখানে আমরা fare-face কনক্রিট চারিদিকে দেখাতে চেয়েছি, সেক্ষেত্রে কনক্রিটে মূল কাঠামো ঢালাই-এর পরে আবার রড বের করা এবং দেয়াল ঢালাই করা একটা জটিলতা সৃষ্টি করে। এগুলো নির্মাণ কাজের গতিকে শ্লথ করে দেয়, তাই আমরা ঠিক করলাম স্লাব হয়ে যাক, পরে কনক্রিটের wall panel বসানো হবে, বাইরে ৩”কনক্রিট দেয়াল, তারপর ৫”ফাঁক এবং ভিতরে ৫”ইটের দেয়াল । ইটের Bonding-এর ব্যাপারে বলতে গেলে, এগুলোর অনেকটাই আমাদের এখানে আগে থেকে চলে আসছে। রেলওয়ের Building গুলোতে নানা ধরনের Bonding আছে। যখন ইটের ভারবাহী দেয়াল করা হয়, তখন দুই পাশেই খোলা রাখা উচিত। বিশেষ করে যখন সাধারণ ইটে কাজ করা হয় তখন দেয়ালের একটা পাশ খুব অসমতল হয়ে যায়। এটাকে ঠিক করার জন্য আমরা যা করি তা হলো Queen closer দিয়ে, দু'দিকেই stretcher Bond ব্যবহার করি। রেজাউল কবির: Site প্ল্যানিং-এর ক্ষেত্রে আগে আপনি যেমন Individual বিল্ডিং নিয়ে কাজ করতেন, আজকাল ক্রমশ দেখছি আপনার বিল্ডিংগুলি পরস্পর সংলগ্ন এবং Complex এর রূপ নিচ্ছে, এই পরিবর্তন নিয়ে কিছু বলুন। বশিরুল হক: স্থপতি হিসাবে আমার সব সময়ই Integrated প্ল্যান করার ইচ্ছা, আমি Real estate developer দের জন্য কাজ করে আসছি, কিন্তু ওরা complex বিল্ডিং এ যেতে চায় না। ওরা আমাকে individual বিল্ডিং ডিজাইন করতে বলে, এতে ওদের বিক্রীরও সুবিধা, অন্যদিকে আমাকে ফী কম দেয়া লাগে৷ যখন একটা কমপ্লেক্স ডিজাইন করা যায় তখন Repetition fee হয় না। ফী এর পরিমাণ বাড়ে। অথচ আলাদা আলাদা বিল্ডিং করলে স্থাপত্য শৈলী প্রকাশের সুযোগ কমে যায়, ইস্পাহানীর কাজ করার সময় লেক ভিউ এপার্টমেন্টে আমরা একটা সমন্বিত বিল্ডিং করতে পেরেছি, তাও স্পেসের সীমাবদ্ধতার জন্য সুযোগটা পেলাম। এর মাঝখানের উঠোনের মতো জায়গাটা মূলত Breathing space হিসাবে চিন্তা করা হয়েছিল। এসব ব্যাপারে আমরা অনেকটা সফল হয়েছি কালিন্দি এপার্টমেন্ট প্রকল্পে। মাঝখানে বেশ কিছু খোলা জায়গা ছাড়া হয়েছে। এতে পরিবেশটা রক্ষা করা গেছে। |
ছবি : সেঞ্চুরী টাওয়ার |
ছবি : কালিন্দি এপার্টমেন্ট |
ছবি : কালিন্দি এপার্টমেন্টের খোলা স্পেস |
রেজাউল কবির: Construction team-এর ব্যাপারে আপনার মতামত কি? আমাদের দেশে যে কেউই এ কাজে যখন ইচ্ছা নেমে পড়তে পারে, কোন সংশ্লিষ্ট যোগ্যতার প্রয়োজন নেই। আপনি অনেকগুলি team নিয়ে কাজ করেছেন। কিভাবে ভাল ফলাফল পাওয়া যাবে সে বিষয়ে কিছু বলুন। বশিরুল হক: আমি exposed Brick-এর কাজ বেশী করি ফলে,কনষ্ট্রাকশন টীমের দক্ষতা অবশ্যই গুরুত্বপূর্ণ। আমরা শর্ত আরোপ করি,যে সব মিস্ত্রী কাজ করবে, তারা যেন খুব ভাল মানের হয়, ডিজাইন ভাল হলেই বিল্ডিং ভাল নাও হতে পারে । এক্ষেত্রে construction firm-এর অবদান অনেক বেশী। বিল্ডিং-এর প্রকৃতির উপর নির্ভর করে construction team বাছাই করার উপর আমরা জোর দেই। কোন ধরনের কাজের জন্য কি জাতীয় টীমের দরকার সে নিয়ে আমরা নিরবচ্ছিন্ন ভাবে client কে বুঝানোর চেষ্টা করি। Institutional client হলে অনেক সময় সমস্যা হয়। ছোট-খাট কাজের জন্য, আমাদের এখানে অনেকগুলি মিস্ত্রি develop করেছি, ওরা এখন ভালোই করছে । আমরা’ত অনেক ড্রইং দেই, আর এসব মিস্ত্রী কাজ করতে করতে ড্রইং বুঝতে শিখে যায়, এইভাবে আমাদের কিছু Suprvisorও তৈরী হয়েছে, তাতে করে আমার কাজ অনেক কমে গেছে। রেজাউল কবির: 'পেশাগত সেবা প্রদান' প্রসঙ্গে আমরা লক্ষ্য করেছি, আমাদের কোন নির্দিষ্ট রূপরেখা নেই। আপনারা কয়েকজন, যেমন, অনেক ড্রইং দেবার প্রথা চালু করেছিলেন, এখন অনেকেই তেমনভাবে দিচ্ছেন না, তার নানাবিধ কারণ থাকতে পারে, Professional service কতদূর পর্যন্ত দেয়া যায়, এবং কি ধরনের নিয়ম অনুসরণ করা যায়? বশিরুল হক: Professional service একটা সম্পূর্ণ বিষয়। অনেকেই আসেন একটা ড্রইং করার জন্য। আমি তাদেরকে বলি, শুধু ড্রইং করে দিলে কোন লাভ হবে না, ড্রইং করতে হবে, ঠিকমত কাজ হল কিনা তাও দেখতে হবে। সুতরাং, ঠিকমত সেবা পেতে হলে, সম্পূর্ণটার জন্যই আমাকে নিয়োগ করতে হবে। Total Service বলতে আমি বুঝাচ্ছি, স্থপতি হিসাবে আমি একটা ডিজাইন করলাম, এই ডিজাইনটার ধারণাকে বুঝাতে হলে ড্রইং করতে হবে। ড্রইং এমনভাবে করতে হবে, যেন কনষ্ট্রাকশন করতে গেলে কোন ধরনের সমস্যায় না পড়তে হয়, স্থাপতিক, কাঠামোগত, বৈদ্যুতিক এবং পয়ঃনিষ্কাশন ইত্যাদি সকল প্রকার ডিজাইনের ক্ষেত্রেই তা প্রযোজ্য। একটার সাথে আরেকটার কোন অসঙ্গতি থাকতে পারবে না, সেগুলি পরীক্ষা করতে হবে। একটা দরজার ডিটেইলে গিয়ে তা কোন দিকে খুলবে তা বলে দিতে হচ্ছে এবং তার আগে ঘরটির ভিতরে ফার্নিচার কিভাবে বসতে পারে তা ভেবে রাখতে হবে। একটা বাথরুমেও কত রকমের ডিটেইল চিন্তা করতে হয়। সেগুলি ঠিকমত তৈরী করতে হলে ড্রইং করে দিতে হবে। ক্লায়েন্ট বা মিস্ত্রী যেন কখনওই সিদ্ধান্তহীনতার সমস্যায় না পড়েন। ড্রইং-এর সাথে একটা Bill of quantities দেয়া দরকার। তাকে একটা খরচের ধারণা দেয়া দরকার। এখন ফী এর স্বল্পতার জন্য হয়ত তা দেয়া সম্ভব নয়, তখন Client কে বুঝাতে হবে, কাজটি করতে minimum খরচ কত লাগবে এবং কেন তা প্রয়োজন। সে যদি রাজী না হয় তাহলে সে কাজ না করাই ভালো। আমরা যদি নিজেরাই ethics of conduct না মেনে চলি তাহলে বাইরে থেকে কেউই ঠিক করে দিতে পারবে না। আমরা যেটা করছি তা হলো Client কে বোঝানোর চেষ্টা, তাদের কি করা উচিত। অথচ আমার নিজের ঘর সামলাচ্ছি না, ক্লায়েন্ট কি করবে? আমরাইত ৫% ফী চাই। ক্লায়েন্ট ত আমাদের ওরমক ফী চাইতে বলছে না। প্রাইভেট ক্লায়েন্টের সাথে শতকরা হিসাবে ফী চাইতে গেলে আর হিসাব রক্ষা করা যায় না। সে জন্যে আমি বর্গফুট হিসাবে ফী চাই। |
ছবি : আমেরিকান স্কুল |
রেজাউল কবির: বিভিন্ন শিল্প মাধ্যমে সময়ের সাথে সাথে Style এর পরিবর্তন হয়। আমাদের শিল্পে পাশ্চাত্যের প্রভাব রয়েছে। অনেকে বলছেন এ এক ধরনের অবক্ষয়, আপনি কি মনে করেন? বশিরুল হক: আমাদের সংস্কৃতি বারে বারেই বাধাগ্রস্থ হয়েছে। এ বিষয়ে কিছু করতে গেলে প্রথমে আমাদের একেবারে ভিতরের ধ্যান ধারণাগুলির পরিবর্তন আনতে হবে। পাশ্চাত্য ধারা আমাদেরকে প্রভাবিত করেছে তাতে কতটুকু ক্ষতি হয়েছে তা বলা কঠিন, তবে ক্ষতি তখনই হয় যখন আমরা আমাদের প্রয়োজনকে না বুঝেই পাশ্চাত্য থেকে হুবহু নকল করি। এটাও মনে রাখতে হবে এটা Communication এর যুগ, পৃথিবীর কোথায় কি হচ্ছে, সংগে সংগে তার ঢেউ আমাদের দেশে চলে আসছে। আমাদের সচেতনভাবে নিজেদের সৃজন প্রক্রিয়া গড়ে তুলতে হবে। Adaptability থাকবেই, তাকে কিভাবে আমাদের পরিবেশের সাথে মিলিয়েও নিজস্বতা বজায় রাখতে পারব তার একটা পদ্ধতি আমাদের অগ্রগতির স্বার্থেই প্রয়োজন। আমি সংস্কৃতির ক্ষতটাকে ঠিকমত বুঝবার উপরে জোর দিচ্ছি, পাশ্চাত্যেও এটা শুরু হয়েছে। ওরা deconstructionism নিয়ে কথা বলছে। আমার মনে হয় আমাদেরও নিজেদের অতীতের কিছুটা deconstruction প্রয়োজন। করতে পারলে আমাদের অতীতকে বুঝে একটা সামঞ্জস্য রক্ষা করা যেত। Graft করাটা অনুচিত, কেউ একজন ঢাকায় একটা Glass building বানিয়ে ফেললে তার সাথে সংস্কৃতির যোগসুত্র খুঁজে পাওয়া যাবে না। আমরা সহজেই পাশ্চাত্যকে ত্যাগ করতে পারব না কারন আমরা যে কোন ধরনের tools ই ব্যবহার করি না কেন, Scientificই হোক বা Philosophical হোক, পাশ্চাত্যের প্রভাব থাকছেই। রেজাউল কবির: অতীত-বর্তমানের প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশের স্থাপত্য চর্চা সম্পর্কে আপনার অভিমত এবং নির্মাণ উপকরণ, উপাদান ও অন্যান্য ব্যবহারিক দিক বিবেচনা করে এদেশের স্থাপত্য চর্চার একটি স্বকীয় ধারা সৃষ্টি করার ব্যাপারে আপনি কতটুকু আশাবাদী? বশিরুল হক: স্থাপত্যের নিজস্বতা তখনই আসবে যখন কেউ যে স্থানে স্থাপত্যটি নির্মিত হবে সেস্থানের নিজস্ব নির্মাণ উপকরণ ব্যবহার করবে। বাংলাদেশের স্থাপত্য তখনই বাংলাদেশের মত হবে যখন বাংলাদেশের উপকরণ, বাংলাদেশের কর্মকুশলতা, ও প্রযুক্তি ব্যবহার করা হবে। প্রযুক্তির উন্নয়ন সব সময়ই অর্থনৈতিক পটভূমির উপর নির্ভর করে। আমাদের সমাজ যা afford করতে পারে, আর আমি যে ডিজাইন করি — এই দুয়ের একটা সামঞ্জস্যতা থাকতে হবে। এখানে ৪০০০/- টাকা প্রতিবর্গফুটে খরচ হবে মনে করে আমি যদি একটা অফিস বিল্ডিং ডিজাইন করি, তাহলে বলা চলে আমি একজন স্থপতি হিসাবে সমাজ সচেতন নই। অনেক স্থপতি আছেন যাদের পক্ষে খুব ব্যয়বহুল পাশ্চাত্য ধারার একটা বিল্ডিং ডিজাইন করা কষ্টকর নয়, সে রকম, অনেক বাড়ী বারিধারায় রয়েছেও, ডিজাইন Successful হয়েছে কিনা আমি সেটা বলব না, কিন্তু ঐ বাড়ীগুলির উপাদান যা ব্যবহৃত হয়েছে তার সাথে আমাদের সমাজের আর্থ-সামাজিক পরিস্থিতির সামঞ্জস্যতা খুব কম । নিজের সমাজের অর্থনৈতিক উন্নয়ন, চাহিদা ইত্যাদিকে অনুধাবন করে কাজ করা স্থপতির একটা নৈতিক দায়িত্ব । রেজাউল কবির: এদেশের একজনা স্থপতি হিসাবে আপনার সমাজ ভাবনা কি? বশিরুল হক: স্থপতি হিসাবে আমার সমাজ ভাবনা অন্য যে কোন চিন্তাশীল লোকের মতই। কিভাবে সমাজের অগ্রগতি হবে তা ভিন্ন ভিন্ন পেশার দৃষ্টিকোন থেকে বিভিন্ন ভাবে ব্যক্ত করা যায়। আমাদের জন্য Client এর সাংস্কৃতিক চেতনার মান খুব গুরুত্বপূর্ণ। আমার একটা Idea আছে, ক্লায়েন্টেরও একটা থাকা দরকার। তাহলে দুয়ের সমন্বয়ে অগ্রগতি হবে, কিন্তু যদি তিনি শুধু একটা Requirement এর তালিকা ধরিয়ে দিয়ে বলেন ডিজাইন কর। তাহলে সেখানে সমন্বয়ের প্রশ্নটা থাকে না। সেক্ষেত্রে ব্যাপারটা এক পেসে হয়ে যায়। এক্ষেত্রে বলা যায়, client এর কোন সাংস্কৃতিক মান নেই, এমন, অনেক দৃষ্টান্ত আছে যে, যারা বাড়ী বানাচ্ছেন তাঁরা, সামাজিক সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক চেতনায় খুবই দূর্বল। Client এবং স্থপতির চিন্তার সমন্বয়েই স্থাপত্য গড়ে উঠে, তা না হলে স্থাপত্য হবে না, আমি পেশাজীবী হিসাবে একটা fixed view point নিয়ে থাকতে পারি না, আমার ধারনাগুলির Client এর সাথে সমঝোতার মাধ্যমে চূড়ান্ত রূপ দিতে পারি, আমি ত সমাজের সমগ্র সাংস্কৃতিক মানদন্ড নির্ধারনের দায়িত্ব নেই নি, স্থপতি একা কেন সমাজ চেতনার সব দায়িত্ব নেবেন ? রেজাউল কবির: তৃতীয় বিশ্বের একটি দরিদ্র দেশের নাগরিক ও স্থপতি হিসাবে এদেশের অজস্র গৃহহীন মানুষের মাথার উপর এক টুকরা ছাদ নির্মাণ করার ব্যাপারে আপনার কি কোন ভাবনা বা প্রস্তাব আছে? বশিরুল হক: Harold Benson আমাকে প্রায়ই বলতেন ‘বশির আমরা নিজেদেরকে একটা শৃংখলার মধ্যে আবদ্ধ করে রেখেছি।' আমেরিকায় বসে, পাশ্চাত্য ভাবধারা সম্বন্ধেই একথা বলতেন। দেশে এসে আমি ভাবতে লাগলাম এই সমাজে কি আমার কোন প্রয়োজন আছে? আমি একজন স্থপতি, স্থাপত্য আমার পেশা, তাই মানুষের জন্য facilities ডিজাইন করাই আমার কাজ। আমার Aesthetic Sensibility, আমার জন্মগত আমি সেই সব Building material ব্যবহার করি যেগুলি ঐ ইমারতের স্থাপত্য শৈলীর সহায়ক হবে। আমি স্থপতি হিসাবে অনেক সময় ভাবতে চাই, আমি কি সমাজের সামগ্রিক পরিপ্রেক্ষিতের সাথে একাগ্র হতে পারি না? আমার ধারণা, আমাদের সকলের জন্য আরও ভাল পরিবেশ তৈরি করা সম্ভব। Community design Centre এক্ষেত্রে একটি ভাল ব্যবস্থা হতে পারে। আমাদের মত ডিজাইনরত স্থপতি লোকেরা সেখানে বিনা পারিশ্রমিকে কিছু সময় কাজ করবে। যারা একজন স্থপতির পূর্ণাঙ্গ সেবা গ্রহনে সক্ষম নয়, তারা সেখান থেকে নাম মাত্র খরচে ডিজাইন গ্রহণ করে নিজের আবাসিক পরিবেশ সুন্দর করে তুলতে পারবেন। তবে আমি কখনও গ্রামের বাড়ীঘর উন্নয়নের জন্য ভাবিনি অথবা শহরের বস্তি উন্নয়ন কিভাবে হবে সে বিষয়ে আসলে আমার যথেষ্ট স্পষ্ট ধারণা নেই বলে আমি মনেকরি। অতএব এ বিষয়ে আমি মতামত রাখার উপযুক্ত লোক নই । |
রেজাউল কবির: এই পেশা নিয়ে আপনার প্রত্যাশা বা প্রাপ্তি কি? স্থাপত্য নিয়ে আপনি কি স্বপ্ন দেখছেন? বশিরুল হক: In a traditional Concept I am an architect. একজন good designer. প্রাপ্তি যেটা হয়েছে তাতে আমি সুখী। প্রত্যাশা সম্বন্ধে বলব আমার আশা যে আমি কোন দিন হয়ত একটা Complex building ডিজাইন করতে পারব। যেখানে আমার নিজস্ব সীমাবদ্ধতা নিজস্ব expression, creativity At least আমার মনের মধ্যে যে প্রত্যাশা আছে যে হয়ত বা আমি খুব ভাল ডিজাইন করতে পারব— যদি একটা Complex building পাই, তাহলে প্রমাণ করার মত সুযোগ হবে যে আমি পারি কি পারি না— যদি না পারি তাহলে অবসর নেব— কিন্তু প্রত্যাশা হল, দেখতে চাই আমি পারি কি পারি না ৷ বিশ্ববিদ্যালয়, National building, Museum, বড় ধরনের অল্প খরচের আবাসিক প্রকল্প এই জাতীয় একটা প্রকল্প ডিজাইনের সুযোগ পেলে ধন্য হব।
|
ছবি : স্থপতি বশিরুল হক |