২৩ থেকে ৪০ ধাপে একটি শ্রীকলাহস্তি চিত্র তৈরী হয়, কয়েক মাস সময় লাগে। আদিতে সাদা সূতির উন্নত মানের কাপড় এই কাজের জন্য ব্যবহৃত হত। কিন্তু সিল্ক ও তসর সিল্কের উপরেও এটা করা যায়। গরুর গোবর ভাল করে গুলিয়ে সাদা কাপড়টি তার মধ্যে কয়েক ঘন্টা ভিজিয়ে রাখতে হয়, এরপর ধুয়ে শুকাতে হবে। তারপর ননীযুক্ত দুধ বা ঘোলের মধ্যে ভজোতে হবে। পরদিন সেই কাপড় সিদ্ধ করতে হবে। এরপর স্রোতের পানিতে ধুতে হবে এবং শুকাতে হবে। এই ননী কাপড়টিকে ড্রইং এর উপযুক্ত মসৃণ করে ফেলে এবং কলম দিয়ে আঁকতে সুবিধা হয়। ড্রইং শেষ হলে শুকাতে হবে তারপর ধুতে হবে এবং শুকিয়ে রং ভরাট করা শুরু করতে হবে। কালমকারিতে প্রাকৃতিক রং ব্যবহার করা হয়, সেজন্য রং কিছুটা ঝাপসা মনে হয়, কিন্তু এই রং চটুল নয় গভীর একটা আবহ থাকে। প্রতিটা রং আলাদা আলাদা করে আরোপ করতে হবে এবং শুকানোর পর অন্য রং দেয়া যাবে। সবকটি রং দেয়া হয়ে গেলে কাপড়টা সিদ্ধ করে, তারপর কয়েকদিন পানিতে ভিজিয়ে রেখে দিতে হবে, রংটা পচানোর বা গাজাঁনোর জন্য। এরপর কাপড়টা শেষ বারের মত ধুয়ে, রোদে শুকালে ছবির কাজ শেষ।
মসিলিপটনম কলমকারি: কলমকারির অন্য প্রসিদ্ধ একটি ঘরানার নাম হল মসিলিপটনম বা মসুলিপট্টম। অন্ধ্র প্রদেশের করমন্ডল উপকুলে কৃষ্ণা জেলায় মসুলিপট্টম একটি বন্দর শহর ছিল। এখন কৃষ্ণা জেলার প্রধান প্রশাসনিক দপ্তর। এখানে আরব, পারস্যের বণিকদের সওদাগোরি জাহাজ ভিড়ত। ১৬ শতক থেকে ইউরোপীয় ব্যবসায়ীদের বসতি উঠতে শুরু করে, ১৭ শতকে এটি বৃটিশ, ওলন্দাজ ও ফরাসীদের একটি গুরুত্বপূর্ণ বানিজ্য বন্দর ছিল।এই জেলার পেডানা অঞ্চলে গোলকুন্ডার মুসলিম শাসকদের পৃষ্ঠ-পোষকতায় মসুলিপট্টম ঘরানার ছবি জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। মুঘল রাজ দরবারেও সুখ্যাতি ছিল। দরবার কক্ষের শোভা বর্ধনের জন্য এই ছবি আঁকা কাপড় ঝুলানো হত।