স্থপতি নিশি সাইমুন
হিন্দু মন্দির হল হিন্দুদের দেব-দেবীর উপাসনার স্থান। ‘মন্দির’ বা ‘দেবালয়’ বলতে বোঝায় ‘দেবতার গৃহ’। মানুষ ও দেবতাকে একত্রে নিয়ে আসার জন্য হিন্দুধর্মের আদর্শ ও ধর্মবিশ্বাস-সংক্রান্ত প্রতীকগুলির দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়ে নির্মিত ভবন বা স্থানকেই ‘মন্দির’ বলা হয়।
হিন্দু মন্দিরের প্রতীক ও গঠন বৈদিক ঐতিহ্যের মধ্যেই নিহিত আছে। মন্দিরের গঠনভঙ্গি কেমন হওয়া উচিত, তা বর্ণিত হয়েছে স্থাপত্য-সংক্রান্ত সংস্কৃত প্রবন্ধগ্রন্থগুলোতে (যেমন, বৃহৎসংহিতা, বাস্তুশাস্ত্র ইত্যাদি)। মন্দিরের নকশা, অলংকরণ, পরিকল্পনা ও নির্মাণশৈলীর মধ্যে প্রাচীন প্রথা ও রীতিনীতি, জ্যামিতিক প্রতীকতত্ত্ব এবং হিন্দুধর্মের বিভিন্ন সম্প্রদায়ের নিজস্ব বিশ্বাস ও মূল্যবোধকে প্রতিফলিত করে । হিন্দু মন্দিরের জ্যামিতিক গঠন স্থাপত্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। যে কোনো নকশার মতই মন্দিরের নকশার জ্যামিতিক গঠন শুরু হয় একটি লাইন দিয়ে, কোণ গঠন করে, একটি ত্রিভুজ বিকশিত হয়ে, এরপর একটি বর্গক্ষেত্র এবং সুষমভাবে একটি বৃত্ত গঠনের মাধ্যমে যা সর্বশেষে একটি জটিল আকৃতি ধারন করে।(তথ্য: হিন্দু মন্দির স্থাপত্য – বাংলা উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে সংগৃহীত) |
হিন্দু মন্দিরে একটি শিখারা ( Vimana or Spire) আছে যা মন্দিরের কেন্দ্রীয় অংশের উপরে সুষমভাবে (Symmetrically) গঠিত হয়। এই শিখারাগুলো অনেক রকম ডিজাইনে এবং বিভিন্ন আকারে হয়ে থাকে। তবে এগুলোর সবগুলোতে গাণিতিক নির্ভুলতা ও জ্যামিতিক প্রতীক রয়েছে। মন্দিরগুলোর একটি সাধারণ রীতি হল – বৃত্ত এবং টার্নিং স্কোয়ার্স থিম এবং একটি ঘনক স্তর স্থাপনের নকশা তৈরি করা। মাদুরাই মীনাক্ষী মন্দির হিন্দু মন্দিরের জ্যামিতিক বৈশিষ্ট্যের একটি অন্যতম উদাহরণ। জ্যামিতিক বর্গের রটেশন এবং সুপারিম্পিজিশনের দ্বারাও কিছু মন্দিরের তারকাকৃতির প্ল্যান পরিকল্পিত করা হয়। সোমনাথপুরের কেশব মন্দির এধরনের একটি উদাহরণ। |
আবার হিন্দু টেম্পল আর্কিটেকচার- উইকিপিডিয়াতে বলা আছে – মন্দিরের গর্ভগৃহের চারদিকে বিশেষ করে পরিকল্পনাটি করা হয় একটি গ্রিড প্ল্যানিং অনুসারে। যেটা vastu-purusha-mandala নামে পরিচিত। এখানে mandala বলতে বৃত্ত , purusha কে হিন্দু ঐতিহ্যের মূল সর্বজনীন সারমর্ম এবং vastu কে আবাস কাঠামো বোঝানো হয়েছে। এখানে ১ পদ বিশিষ্ট গ্রিডকে সাধারন পরিকল্পনা হিসাবে বিবেচনা করা হয়- একজন ভিক্ষু বা ভক্তের বসে ধ্যান করার জন্য বা যোগব্যায়াম বা বৈদিক আগুনের সামনে নৈবেদ্য দেওয়ার জন্য। ৪ পদের দ্বিতীয় নকশার তির্যক ছেদটিতে একটি প্রতীকী কেন্দ্রীয় কোর রয়েছে এবং একটি ধ্যানমূলক বিন্যাসও রয়েছে। ৯ পদ বিশিষ্ট নকশাটিতে একটি পবিত্র কেন্দ্র আছে এবং এটি সবচেয়ে ছোট মন্দিরের টেম্পলেট। পুরনো হিন্দু মন্দিরগুলো ৯ থেকে ৪৯ পদ বিশিষ্ট গ্রিড-প্ল্যান ব্যবহার করা হয় তবে হিন্দু মন্দিরগুলোতে ৬৪ পদ বিশিষ্ট গ্রিডটি সবচেয়ে পবিত্র গ্রিড হিসেবে বিবেচিত হয়। |
৯x৯ (৮১) গ্রিড-বিশিষ্ট ‘পরম সায়িক’ নকশা দেখা যায় বৃহদাকার প্রথাগত হিন্দু মন্দিরগুলিতে। হিন্দু মন্দির নির্মাণে যে বিভিন্ন প্রকার গ্রিড ব্যবহৃত হয়, এটি তার মধ্যে অন্যতম। এই ধরনের মন্দির হল সামঞ্জস্যপূর্ণ আকৃতির মন্দির। এখানে প্রত্যেকটি সমকেন্দ্রিক নকশার বিশেষ গুরুত্ব আছে এবং ৫টি ধাপ বিশিষ্ট গ্রিডগুলোর নকশা পরিকল্পনা করা হয়। ‘পৈশাচিক ধাপ’ নামে পরিচিত বাইরের নকশাটি অসুর বা অশুভের প্রতীক। অন্যদিকে ভিতরের ‘দৈবিক ধাপ’ নকশাটি দেবতা বা শুভের প্রতীক। শুভ ও অশুভের মধ্যে এককেন্দ্রিক ‘মানুষ ধাপ’ মানবজীবনের প্রতীক। প্রতিটি নকশা ‘ব্রহ্ম ধাপ’কে ঘিরে থাকে। ব্রহ্ম ধাপটি সৃষ্টিশক্তির প্রতীক। এখানেই মন্দিরের প্রধান দেবতার মূর্তি থাকে। ব্রহ্মধাপের একেবারে কেন্দ্রস্থলটি হল ‘গর্ভগৃহ’। এটি সবকিছু ও সবার মধ্যে অবস্থিত ব্রহ্মের প্রতীক।(তথ্যটি হিন্দু মন্দির – বাংলা উইকিপিডিয়া থেকে সংগৃহীত, লেখক – Mark.muesse, সম্পাদনা- ৭ আগস্ট ২০১৪) হিন্দু মন্দিরের প্রাচীন নির্মাতারা বাস্তুশাস্ত্র (অর্থাৎ, বসতি-বিজ্ঞান। সংস্কৃত ভাষায় ‘বাস’ শব্দের অর্থ বসবাস করা এবং ‘তু’ শব্দের অর্থ ‘তুমি’) নামে এক স্থাপত্য শাস্ত্র রচনা করেছিলেন। এর অন্তর্গত ছিল বাস্তুবিদ্যা বা বসবাস-সংক্রান্ত জ্ঞান। খ্রিস্টীয় ষষ্ঠ শতাব্দীতে এই ধরনের বাস্তুশাস্ত্রগুলি সারা ভারতে ছড়িয়ে পড়েছিল। বাস্তুশাস্ত্রে গৃহনির্মাণ, নগর-পরিকল্পনা, এবং কিভাবে উপযুক্ত গ্রাম, শহর ও রাজ্যগুলি প্রকৃতির সঙ্গে সামঞ্জস্য বজায় রেখে মন্দির, জলাশয় ও উদ্যান নির্মাণ করতে পারে তা লিপিবদ্ধ আছে । |
সাধারণত নদীসংগম, নদীতীর, হ্রদ বা সমুদ্র উপকূল হিন্দু মন্দির স্থাপনের উপযুক্ত স্থান বলে বিবেচিত হলেও বৃহৎসংহিতা বা পুরাণ শাস্ত্রগুলিতে বলা হয়েছে প্রাকৃতিক জলাশয় নেই এমন স্থানেও মন্দির নির্মাণ করা যেতে পারে। তবে সেখানে মন্দিরের সামনে বা বাঁ দিকে কৃত্রিম জলাশয় নির্মাণ করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। যদি প্রাকৃতিক বা কৃত্রিম কোনো রকম জলাশয়ই মন্দিরের পাশে না থাকে তবে মন্দির বা দেবতা প্রতিষ্ঠার সময় প্রতীকীভাবে জলের কল্পনা করতে হয়। |
আমাদের এই বাংলা শস্য – শ্যামল , পলিমাটি দ্বারা আবৃত। তাই মাটির সহজলভ্যতার জন্য বাংলায় পাথরের তুলনায় ইঁটের মন্দির বেশি তৈরি হয়েছে। আর এই ইঁটের তৈরি মন্দিরগুলোকে পৌরাণিক, ঐতিহাসিক, লৌকিক প্রভৃতি ঘটনার ফলক বসিয়ে মন্দিরগুলোকে আরো সজ্জিত ও দৃষ্টি নন্দনকারী করে গড়ে তুলেছেন সেকালের শিল্পী ও কারিগরেরা ।বাংলার মন্দিরগুলোকে প্রধানত চারটি শ্রেণিতে ভাগ করা যায় :চালা, রত্ন, দেউল এবং চাঁদনী দালান। চালার মধ্যে – দোচালা, চার চালা, আট চালা, বারো চালা উল্লেখযোগ্য। আবার দুটি চালাকে সামনে পিছনে যুক্ত করে হয় জোড়া মন্দির। চালা মন্দিরের সাথে চাঁদনী, দালান প্রভৃতি স্থাপত্য শৈলীর মন্দিরের কিছুটা সাদৃশ্য থাকলেও চাঁদনী ও দালানের ছাদ সমতল, কিন্তু চালার চাল ঢালু হয়। চাঁদনীর ক্ষেত্রে দালানের পার্থক্য স্পষ্ট হয় আয়তনের দিক থেকে। চালা, চাঁদনী ও দালানের মধ্যে সরল সাদামাটা স্থাপত্য চিন্তাই বেশি প্রতিফলিত হয়েছে, যা ছিল বাংলার একান্ত নিজস্ব স্থাপত্য রীতি। রত্নশৈলী মন্দিরের মধ্যে বাংলার চালা, চাঁদনী বা দালানের ছাদে ছোট আকারের দেউলকে চূড়া বা রত্ন রূপে বসিয়ে নতুন আলাদা এক স্থাপত্যশৈলী বা রীতি সৃষ্টি করা হয়। কিন্তু চূড়া বা রত্ন বসাবার একটা শৃঙ্খলা ছিল। এখান থেকেই রত্ন স্থাপত্যের কয়েকটি শ্রেণির উদ্ধব হয়। যেমন : একরত্ন , পঞ্চরত্ন , নবরত্ন, এয়োদশরত্ন, সপ্তদশরত্ন, একবিংশতিরত্ন ও পঞ্চবিংশতি রত্ন। রত্ন মন্দিরে সর্বোচ্চ পঁচিশটি চূড়া বসানো হতো। দেউল রীতির যে অজস্র মন্দির দেখা যায় সেগুলো প্রাচীন রেখা ও শিখর দেউলের রূপান্তরিত ও সরলকৃত দেউল মন্দির, যা গ্রাম বাংলার সর্বত্রই আমাদের চোখে পড়ে। বাংলার মন্দির স্থাপত্যগুলির সমকালীন সময়ের বাঙ্গালী জাতির ইতিহাস, সামাজিক পরিবেশ প্রভৃতি সব কিছুই সাক্ষী বহন করে নিয়ে চলেছে। মন্দির স্থায়ী উপসর্গের নিদর্শন স্থান। তাই প্রভাবশালী জমিদার থেকে রাজন্যবর্গ পুণ্য অর্জন বা পূর্বপুরুষের স্মৃতির উদ্দেশ্যে মন্দির নির্মাণ করে তাদের আরোধ্য দেব-দেবীকে উৎসর্গ করতেন। |
ঢাকেশ্বরী মন্দির ঢাকা শহরের পলাশী ব্যারাক এলাকায় বাংলাদেশ প্রকৌশল বিদ্যালয়ের ছাত্রাবাস সমূহের দক্ষিণে ঢাকেশ্বরী সড়কের উত্তর পাশে একটি আবেষ্টনী প্রাচীরের মধ্যে মন্দিরটি অবস্থিত। |
মন্দির অঙ্গনে প্রবেশের জন্য একটি সিংহদ্বার রয়েছে , যা নহবতখানা তোরণ নামে পরিচিত। মন্দিরটি কয়েকটি মন্দির ও সংলগ্ন সৌধের সমষ্টি , যা দুটি অংশে বিভক্ত। পূর্বদিকে অন্তর্বাটি ও পশ্চিম দিকে বহির্বাটি। পূর্বদিকের অন্তর্বাটিতে প্রধান মন্দির, নাটমন্দির ও অন্য ইমারত রয়েছে। এখানে আরেকটি তোরণ দ্বার রয়েছে যেটি দিয়ে অন্তর্বাটিতে প্রবেশ করতে হয়। বহির্বাটিতে কয়েকটি মন্দির , একটি পান্থশালা ও বেশ কয়েকটি ঘর রয়েছে। পশ্চিমদিকে আছে উত্তর – দক্ষিণে লম্বমান একটি প্রাচীন দীঘি যার চারদিকে একটি পায়ে চলা পথ বিরাজমান। দীঘির দক্ষিণ –পূর্ব কোণে একটি প্রাচীন বটগাছ এবং এরই পূর্ব পাশে কয়েকটি সমাধি রয়েছে। মূল মন্দির প্রাঙ্গণের বাইরে মহানগর পূজামণ্ডপ অবস্থিত। |
দীঘির উত্তর-পূর্ব কোণে পূর্ব –পশ্চিম বরাবর একই সারিতে সমআয়তনের ও একই রকমের দেখতে প্রথম নির্মিত চারটি শিব মন্দির। মানসিংহ ১৫৯৪-১৬০৬ সাল পর্যন্ত তিন দফায় বাংলার সুবেদার থাকাকালে মন্দিরটির জরাজীর্ণ অবস্থা দেখে এটির সংস্কারের ব্যবস্থা করেন। এসময় তিনি মন্দির প্রাঙ্গণে ৪টি শিবলিঙ্গ স্থাপন করেন ও তার পাশাপাশি চারটি শিবমন্দিরও নির্মাণ করেন। তবে মানসিংহই মন্দিটির সংস্কার করেছিলেন এমন সুনির্দিষ্ট কোনো প্রমাণ পাওয়া যায় না। মন্দিরের নকশা, পরিকল্পনা ও নির্মাণশৈলীর মধ্যে প্রাচীন প্রথা ও রীতিনীতি, জ্যামিতিক প্রতীকতত্ত্ব প্রতিফলিত করে। (উৎস: বাংলা হিন্দু মন্দির উইকিপিডিয়া থেকে সংগৃহিত) |
এই চারটি মন্দির একই উঁচু বেদীর উপর সারিবদ্ধভাবে দন্ডায়মান লম্বা চূড়া বিশিষ্ট একই রীতিতে নির্মিত বর্গাকার কক্ষবিশেষ। ঢাকেশ্বরী মন্দিরকে সবাই এক নজরে চেনে এই পিরামিডাকৄতির মন্দিরগুলো দেখে। বাংলার চৌ – চালা এবং শিখর মন্দিরের যুগল নির্মাণশৈলীর প্রতিচ্ছবি এই মন্দির। মন্দির চারটি যথেষ্ট উঁচু হলেও এগুলো প্রস্থে সংকীর্ণ। মন্দিরটির দৈর্ঘ্য ১১৬’৪” এবং প্রস্থ ২৯’৬”। চারটি মন্দিরের ছাদ ক্রমহ্রাসমান পিরামিড আকৃতিতে ৬ টি স্তরে বিন্যাস্ত আর তার শীর্ষে শোভা বাড়িয়েছে পদ্মপাপড়ির উপর কলসাকৄতির চূড়া যাকে pinnacles বলে। মন্দিরগুলোর কাঠামো এবং বাহ্যিক কারুকার্য বিস্ময়করভাবে একই রকম। প্রাচীন এই চার মন্দিরে অনেকবার সংস্কারের ছোঁয়া পরলেও দেশীয় চৌ –চালা ও উত্তর – ভারতীয় স্থাপত্য শৈলীর পুরনো আদল এখনও স্পষ্ট। |
আকর্ষণী এই চারটি শিব মন্দির ঢাকেশ্বরী মন্দিরের মূল মন্দির নয়। মূল মন্দিরটি অবস্থিত – মন্দির প্রাঙ্গনের উত্তর-পূর্ব কোণে। এই মন্দিরের প্রবেশপথে আছে একটি বড় তোরণদ্বার আর এর উপরে রয়েছে একটি ঝুলন্ত ঘণ্টা। |
দক্ষিণমুখী মুল মন্দিরে তিনটি কক্ষ ও কক্ষের সামনে একটি আয়তাকার বারান্দা রয়েছে যেখানে তিনটি কারুকার্য বিশিষ্ট ভারী কলাম যার উপর বহু- খাঁজবিশিষ্ট আর্চ বা তোরণ অবস্থিত। কক্ষ তিনটির দরজা সুন্দরভাবে অলংকৃত কাঠের কাঠামোতে নির্মিত। ভল্টেড ছাদ বিশিষ্ট কেন্দ্রীয় কক্ষটি মার্বেল পাথরে আবৃত বারান্দার সাথে সংযুক্ত এবং বারান্দার তিনটি অংশ রয়েছে। কেন্দ্রীয় অংশটি আয়তাকার আর অপর দুটি অংশ বর্গাকার। পাশের কক্ষগুলো কাঠের বীমের উপর ডোমিক্যাল-শিখারা ছাদবিশিষ্ট। কেন্দ্রীয় কক্ষের উপরে ডোমিক্যাল – শিখারাটি অন্য দুটির চেয়ে সবচেয়ে বড় এবং উঁচু এবং এগুলোর প্রতিটি নিচ থেকে ক্রমহ্রাসমান চারটি স্তরে নির্মিত। সর্বনিম্ন স্তরেরটি কিছুটা চৌ – চালাকৄতির এবং উপরের তিনটি স্তর উত্তর – ভারতীয় ক্যানোপিগুলোর আকৄতিতে নির্মিত। |
মূল মন্দিরের কেন্দ্রীয় কক্ষের ডান ও বাম পার্শ্বের কক্ষদুটির প্রতিটিতে একটি করে কষ্টি পাথরের তৈরি শিবলিঙ্গ রয়েছে। কেন্দ্রীয় কক্ষে প্রতিষ্ঠিত ছিল একটি চতুর্ভুজ দেবমূর্তি (বাসুদেব নামে পরিচিত) এবং একটি দশভুজা দেবী মূর্তি (ঢাকেশ্বরী দেবী বা দুর্গা দেবী নামে পরিচিত)। মন্দিরের এ দেবী দুর্গা বা দশভুজার মূর্তিটি স্বর্ণ-নির্মিত ছিল বলে জানা যায়। |
বর্তমানে ঢাকেশ্বরী মন্দিরটি তার দীর্ঘ অস্তিত্বকালে পুননির্মাণ ও সংস্কারের দরুন এর আদি স্থাপত্য বৈশিষ্ট্যের কোনো কিছুই স্পষ্টভাবে প্রকাশ করে না বাংলার প্রাচীন স্থাপনাগুলো কালের বিবর্তনে হারিয়ে গেলেও যেসকল স্থাপনা সংরক্ষণ করা গেছে তা দেখে এতটুকু বলা যায় যে, রেনেসা যুগে বাংলার মসজিদ ও মন্দিরে কার্যশিল্পের চর্চা এই আধুনিক সভ্যতাই বিরল। তাই তো এই স্থাপনাগুলো ইতিহাসের সাক্ষী হয়ে বাঙ্গালীর গৌরবময় অতীতের কথা মনে করিয়ে দেয়। |
স্থপতি নিশি সাইমুন (বুয়েট থেকে স্নাতক) নির্ণয় উপদেষ্টা লিমিটেড, পান্থপাথ |