আজ বিশ্ববরেণ্য চিত্রশিল্পী এস এম সুলতানের ১০১ তম জন্মবার্ষিকী। তিনি তার ব্যতিক্রমী চিত্রকর্মের জন্য বিখ্যাত, যেখানে তিনি বাংলার কৃষকদের শক্তিশালী পেশীবহুল রুপে ফুটিয়ে তুলেছেন। গ্রামীণ বাংলাদেশের ভাবমূর্তি পুনর্নির্ধারণকারী দূরদর্শী শিল্পী এস এম সুলতানের ১০১তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে সারাদেশেই আজ নানা কর্মসূচি পালিত হচ্ছে। |
আর্থিক অনটনের কারণে এস এম সুলতান প্রাথমিকভাবে প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা ত্যাগ করেন। স্থানীয় জমিদার ধীরেন্দ্রনাথ রায়ের উৎসাহে তিনি কলকাতা সরকারি আর্ট কলেজে ভর্তি হন কিন্তু ১৯৪৩ সালে পড়াশোনা শেষ করার আগেই তিনি কলেজ ত্যাগ করেন। যাযাবর জীবনযাপনকারী সুলতান, গ্রামীণ নারী-পুরুষের নির্ভীক বীরত্বপূর্ণ চরিত্রের চিত্রায়নে তার শৈল্পিক কণ্ঠ খুঁজে পেয়েছিলেন। তাঁর প্রথম প্রদর্শনী সিমলায় (১৯৪৬) এবং পরে লাহোর ও করাচিতে (১৯৪৮-৪৯) অনুষ্ঠিত হয়েছিল। ১৯৫৯ সালের মধ্যে, তাঁর কাজগুলি নিউ ইয়র্ক, বোস্টন, মিশিগান বিশ্ববিদ্যালয় এবং লন্ডনের দর্শকদের কাছে পৌঁছে গিয়েছিল। তার অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ, কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয় ১৯৮২ সালে তাকে "ম্যান অফ এশিয়া" হিসেবে মনোনীত করে। তিনি বাংলাদেশের সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মাননাও লাভ করেন, যার মধ্যে রয়েছে একুশে পদক (১৯৮২), বাংলাদেশ চারুশিল্পী সংসদ পুরস্কার (১৯৮৬) এবং স্বাধীনতা পুরস্কার (১৯৯৩)। |
এস. এম. সুলতানের জন্মদিন উপলক্ষ্যে, তাঁর জন্মবার্ষিকী উদযাপনের অংশ হিসেবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জয়নুল গ্যালারি ও চারুকলা প্রাঙ্গণে বিশেষ উৎসবের আয়োজন করা হয়েছে। এই উৎসবে চিত্রকর্মের পাশাপাশি ভাস্কর্য ও চলচ্চিত্র প্রদর্শনী, আলোচনা সভা এবং বিভিন্ন কর্মসূচির মাধ্যমে এই মহান শিল্পীর শিল্প ও দর্শনের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করা হবে, যা নতুন প্রজন্মের মধ্যে শিল্পচেতনার বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। সুলতান জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন কমিটি ধানমন্ডির বেঙ্গল শিল্পালয়ে "দ্য লিগেসি আর্টিস্ট সুলতান" শীর্ষক একটি বিশেষ আলোচনার আয়োজন করেছে। |
সুলতানকে উৎসর্গীকৃত সাহিত্য পত্রিকা নৃ-এর ১৯৯০ সালের সংখ্যা সম্পাদনাকারী চলচ্চিত্র নির্মাতা নুরুল আলম আতিকও তাকে নিয়ে "লাল মিয়া" নামে একটি পূর্ণাঙ্গ চলচ্চিত্র নির্মাণ শুরু করেছেন। |