-
প্রকল্পের নাম: নগরের দুর্যোগ-আক্রান্তদের জন্য অস্থায়ী আশ্রয় প্রকল্প শিক্ষার্থীর নাম: সাকিব নাসির খান প্রকল্প স্থান: ধূপখোলা মাঠ, গেণ্ডারিয়া, ঢাকা, বাংলাদেশ প্রকল্প বছর: ২০২৪ সুপারভাইজারের নাম: ড. আসমা নাজ, নায়না তাবাসসুম বিভাগীয় প্রধানের নাম: অধ্যাপক ড. এস এম নাজমুল ইমাম বিশ্ববিদ্যালয়: বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) পুরস্কার: আর্কএশিয়া থিসিস অফ দ্য ইয়ার ২০২৪-এর বিজয়ী |
ঢাকা মোগল সাম্রাজ্যের পূর্বাঞ্চলীয় প্রদেশ বেঙ্গলের রাজধানী হয়েছিল ৪০০ বছর আগে। বর্তমানে এটি একটি মেগা-সিটি, যেখানে পুরনো ঢাকার কিছু অংশে সমৃদ্ধ সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য সংরক্ষিত রয়েছে। তবে এর ভৌগোলিক অবস্থান এবং অপরিকল্পিত নগরায়ণের কারণে, ঢাকা বিশ্বের শীর্ষ ২০টি ভূমিকম্প-প্রবণ শহরের মধ্যে রয়েছে। পুরনো ঢাকার বেশিরভাগ অংশই দুর্বল অবকাঠামো, জনবহুল পরিবেশ এবং বিল্ডিং কোড না মানার কারণে ভূমিকম্প এবং অগ্নিকাণ্ডের ঝুঁকিতে রয়েছে। বড় ধরনের কোনো দুর্যোগের পর, এই অঞ্চলের বহু স্থাপনা বাসযোগ্য থাকবে না, ফলে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর জন্য জরুরি দুর্যোগ আশ্রয় (Disaster Relief - DR) নিশ্চিত করা অত্যাবশ্যক। রাজউক (RAJUK) ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিদের জরুরি আশ্রয়ের জন্য অক্ষত সরকারি স্কুল ভবন এবং সরকারি পার্ক বা খেলার মাঠ ব্যবহারের প্রস্তাব দিয়েছে। তবে, ঢাকার জন্য নির্দিষ্ট দুর্যোগ আশ্রয়ের গাইডলাইন সরবরাহ করা হয়নি। |
এই প্রকল্পটি এই ঘাটতিগুলো পূরণে একটি কার্যকর অস্থায়ী ও স্থানান্তরযোগ্য আশ্রয় ব্যবস্থা (T-Sheltering) তৈরির প্রস্তাব দেয়, যা ধূপখোলা মাঠে দুর্যোগ-পরবর্তী সংকট মোকাবিলায় প্রায় দুই বছর পর্যন্ত প্রয়োজনীয় সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করবে। এতে সুত্রাপুর ও গেণ্ডারিয়া থানার বাসিন্দাদের জন্য পরিকল্পনা করা হয়েছে। এই ব্যবস্থাটি অন্যান্য সরকারি পার্ক বা খেলার মাঠে সহজেই প্রয়োগযোগ্য। সরকারি ও মানবিক সংস্থার তহবিলে পরিচালিত এই প্রকল্পটি মাঠটিকে জরুরি পরিস্থিতিতে আশ্রয় দেওয়ার জন্য প্রস্তুত রাখবে এবং পরবর্তীতে এটি পূর্বের কার্যক্রমে ফিরে আসবে। প্রকল্পটি পুনরুদ্ধারের জন্য সামাজিক থেরাপিউটিক স্থানও অন্তর্ভুক্ত করেছে, যা ভবিষ্যৎ অনুরূপ উদ্যোগের জন্য একটি দৃষ্টান্ত স্থাপন করবে। |
নকশা বিবেচনা |
|
নকশা বিবেচনা: এই নকশা প্রস্তাবটি তৈরি করতে মিশ্র গবেষণা পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়েছে, যার মধ্যে ফিল্ড সার্ভে, বিশেষজ্ঞদের সাক্ষাৎকার এবং প্রশ্নপত্রের মাধ্যমে মতামত সংগ্রহ অন্তর্ভুক্ত। পেছনের গবেষণায় নগর দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা, আশ্রয় এবং পুরনো ঢাকার দুর্বলতার ওপর একাডেমিক গবেষণাপত্র পর্যালোচনা করা হয়েছে। পর্যবেক্ষণ ও সাইট ভিজিটের মাধ্যমে একটি ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা চিহ্নিত করা হয়, যেখানে প্রায় ১০০ জনের সাক্ষাৎকারের মাধ্যমে স্থানীয় জীবনযাত্রা এবং দুর্যোগ প্রস্তুতির তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে। ধূপখোলা মাঠকে একটি উপযুক্ত আশ্রয়স্থল হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। |
|
|
এছাড়াও UNHCR Emergency Handbook, Sphere Handbook এবং Bangladesh Shelter Cluster Guidelines-এর মতো আন্তর্জাতিক মানবিক মানদণ্ড বিশ্লেষণ করে স্থানীয় চাহিদার প্রতি সংবেদনশীল একটি নকশা তৈরি করা হয়েছে। |
|
|
|
|
|
মূল নকশার বৈশিষ্ট্য:
3. পরিকল্পনার ধাপ: প্রাক-দুর্যোগ: মাঠ প্রস্তুত রাখার জন্য র্যাম্প এবং জরুরি যান চলাচলের রাস্তা অন্তর্ভুক্ত। জরুরি ধাপ ১: প্রাথমিক চিকিৎসা কেন্দ্র স্থাপন এবং মাঠকে ব্লকে ভাগ করা। জরুরি ধাপ ২: অস্থায়ী টয়লেট স্থাপন এবং আবাসনের পরিকল্পনা করা। জরুরি ধাপ ৩: তাবু স্থাপন এবং স্থানান্তরযোগ্য আশ্রয় তৈরির কাজ শুরু। |
সিঙ্গেল ইউনিটের অ্যাক্সোনোমেট্রিক ভিউ |
|
|
|
|
|
উদ্ভাবনী দৃষ্টিভঙ্গি: এই প্রকল্পটি স্থানীয় চাহিদা ও আন্তর্জাতিক মানদণ্ডের সমন্বয়ে দুর্যোগ-পরবর্তী নগর পুনরুদ্ধারে একটি দৃষ্টান্ত স্থাপন করবে। এটি শুধুমাত্র ধূপখোলা মাঠ নয়, বরং বিশ্বের অন্যান্য শহরেও প্রাসঙ্গিক হতে পারে।
|
|
জুরি মন্তব্য: "এই ধরনের নকশার প্রয়োজনীয়তা, নকশার পেছনে গভীর গবেষণা, এত মাত্রা অন্তর্ভুক্ত নকশা প্রক্রিয়া, কাজের পরিমাণ এবং বিশদ বিবরণ এবং অঙ্কন - সব মিলিয়ে, প্রকল্পের উপস্থাপনা ছিল একটি সম্পূর্ণ প্যাকেজ। যদিও কাল্পনিক, প্রকল্পটি ঢাকার প্রেক্ষাপটের সাথে খুবই প্রাসঙ্গিক এবং এমনকি অন্যান্য স্থানেও এটি প্রতিলিপি করা যেতে পারে। এই নকশায় ব্যবহৃত উপকরণের পুনঃবিক্রয় মূল্য আমার অনুমানকৃত ৫০% এর চেয়ে অনেক বেশি হবে। এই ধরনের উদ্যোগ নেওয়ার জন্য প্রাসঙ্গিক স্টেকহোল্ডারদের সাথে যোগাযোগ করা প্রয়োজন।" |
|
|
নির্মাণাধীন পর্যায়ে রান্নাঘর এবং ব্লকের কেন্দ্রীয় উঠোন |
|
এক অর্ধ-ক্লাস্টার হতে অন্য অর্ধ-ক্লাস্টারের ভিউ |
|
প্রতিবেদক: স্থপতি ফাইজা ফাইরুজ |