| ‘Colours of Love: ভালোবাসার রং’, চিত্রশিল্পী সুমনা হকের ৬ষ্ঠ একক চিত্র-প্রদর্শনী। ২৪ অক্টোবর হতে ২৪ নভেম্বর পর্যন্ত প্রদর্শনীটি চলবে ঢাকার গুলশান ১ – এর Lounge Comida, রাফলেশিয়া, একটি সার্ভিস অ্যাপার্টমেন্টে। এ প্রদর্শনীতে মূলত দুটি সিরিজে চিত্রকর্মগুলো করা হয় – Colours of Love & Song of Nature. এ প্রদর্শনীতে মোট ৫১টির মতো ছবি আছে, যেগুলো এক্রেলিক এবং তেলরং উভয় মাধ্যমেই আঁকা হয়েছে। ছবিগুলো বিভিন্ন সময়ে (২০১৩-২০২৫ সাল) আঁকা হয়েছে। |
|
|
সুমনা হকের চিত্রকর্মগুলো মূলত টেক্সচার-বেজড হয়। তার চিত্রকর্মগুলোয় বিভিন্ন ধরণের রঙের খেলার মধ্য থেকে তার হাসিখুশি ব্যক্তিত্ব প্রতিফলিত হয়। "কুইন অফ জিঙ্গেল" খ্যাত সুমনা হক একজন সংগীতশিল্পী এবং চিত্রশিল্পী। তার মা খালেদা এদিব চৌধুরী ছিলেন একজন কবি। সুমনা হক-এর আধুনিক ও রবীন্দ্র সংগীতের চারটি একক গানের অ্যলবাম রয়েছে। তিনি 2000 টিরও বেশি জিঙ্গেলে তার কণ্ঠ দিয়েছেন। চিত্রশিল্পী হিসেবে তিনি তার ক্যানভাসে অ্যাক্রেলিক রং এবং তেলরং ব্যবহার করে প্রাকৃতিক সৌন্দর্যকে অ্যবস্ট্রাক্ট ফর্মে ফুটিয়ে তোলার চেষ্টা করেন। ছবি: 'Colours of Love' (৫১" x ৮১", অ্যাক্রিলিক অন ক্যানভাস) |
|
সুমনা হক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের ‘অঙ্কন ও চিত্রকলা’ বিভাগে বি.এফ.এ. (১৯৮৮ সাল) এবং এম.এফ.এ. (১৯৯০ সাল) করেছেন । এ পর্যন্ত তার ৫টি একক চিত্র-প্রদর্শনী হয়েছে: ▪ ১৯৯৭: ‘আপন মনের মাধুরী’, জয়নুল গ্যালারি, চারুকলা অনুষদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ▪ ২০০১: ‘মন আজ আপন মনে’, জয়নুল গ্যালারি, চারুকলা অনুষদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ▪ ২০০২: ‘নস্টালজিয়া’, ছুয়া গ্যালারি, টোকিও, জাপান ▪ ২০১১: ‘মনের আকাশে রঙধনু: Symphony of Colours’, বেঙ্গল গ্যালারি অফ ফাইন আর্টস, ঢাকা, বাংলাদেশ ▪ ২০১২: ‘মনের রঙে নিবিড় খেলা: Playing Colors’, এম্বেসি অফ বাংলাদেশ, ওয়াশিংটন ডি.সি, ইউ.এস.এ.। |
|
|
|
|
|
|
|
|
|
“বর্ণে গন্ধে ছন্দে গীতিতে হৃদয়ের যে দোলা সেই দোলাতে রঙধনুর সাত রঙ আর সারগামের সাতসুর মিলিয়ে ক্যানভাসে আঁকার চেষ্টা করেছি আপন মনের এলোমেলো ভাবনাকে। হাসি আনন্দের প্রকৃতি এখানে এসেছে জীবনের ঐশ্বর্য ও অফুরন্ত ভালোবাসা নিয়ে । বিষণ্নতার মধ্যেও যে সৌন্দর্য তাকে ক্যানভাসে বর্ণিল ও প্রাণময় করার চেষ্টা করেছি।“ -সুমনা হক |
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
চিত্রশিল্পী সুমনা হক বেশকিছু দলগত প্রদর্শনীতেও অংশগ্রহণ করেন: ▪ ২০২৩: ‘প্লাট ফর্মস’ (‘Plat forms’), ‘ISHO’ কর্তৃক আয়োজিত প্রদর্শনী। ▪২০১৯: ২৩তম জাতীয় শিল্প প্রদর্শনী, বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমী,ঢাকা, বাংলাদেশ। ▪ ২০১৬: ‘Colours of Bangladesh’, বাংলাদেশ এম্বেসি, ম্যানিলা, ফিলিপাইনস। ▪ ১৯৯৭-২০০১: ৮তম এবং ১০তম এশিয়ান আর্ট বিয়েনালে, বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমী, ঢাকা, বাংলাদেশ ▪ ১৯৮৯-২০০০: ৯ম, ১২তম, ১৩তম এবং ১৪তম জাতীয় শিল্প প্রদর্শনী, বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমী, ঢাকা, বাংলাদেশ ▪ ১৯৯০: ৫ম মিনিয়েচার আর্টের বার্ষিক আন্তর্জাতিক প্রদর্শনী, ডেল বেলো গ্যালারি (Dell Bello Gallery), টরন্টো, কানাডা |
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
“প্রকৃতির কাছ থেকে পেয়েছি ছবি আঁকার অফুরন্ত উপাদান । সেই ছোট বেলা থেকেই চারপাশের সবুজের সমারোহ, ঝিলের জলে রোদের ঝিকিমিকি, জোৎস্নার লুকোচুরি আমাকে করেছে মুগ্ধ। আর একই সঙ্গে সুরের সাথে গড়ে ওঠে আমার নিবিড় সম্পর্ক। সুর, তাল, লয়, বর্ণ, রং, রেখা- এসবই একসঙ্গে ধরা দেয় আমার কাছে। সুরের সঙ্গে মিশে যায় কল্পনার রং। সুর এবং ছন্দ আমার অনুভূতির ব্যাপ্তিকে করেছে বিশাল । আর এভাবেই আপন মনের মাধুরী মিশিয়ে আমি আমার অনুভূতির প্রকাশ ঘটাতে চেয়েছি ক্যানভাসে । আমি আমার চিত্রে সাধারণের কাছে যেতে পেরেছি কিনা জানি না, তবে চেষ্টা করেছি সহজভাবে মনের ভাষাকে উপস্থাপন করতে। সংগীতে যেমন মীড় চলে গড়িয়ে, ছন্দ যেমন দোলা জাগায়, তেমনিভাবে আমি চিত্রে এর ব্যবহারের চেষ্টা করেছি মাত্র।“ -সুমনা হক |
|
|
|
|
|
|
প্রয়াত আতিকুল হক চৌধুরি (বাংলাদেশের প্রখ্যাত নাট্যকার, পরিচালক, শিক্ষক ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব), ২০১১ সালে আর্টিস্ট সুমনা হক-এর সম্বন্ধে বলেন- “শিল্পী সুমনা হিসেবি হয়ে বিভিন্ন রঙের আলো-ছায়ায় তাঁর ছবিতে চমৎকার একটি পরিমণ্ডল সৃষ্টি করেছেন এ কথা আমি বলব না । বরং বলব তাঁর বেহিসেবি শিল্পীমনটাই যেন এখানে অবাধে খেলা করেছে । তাঁর তুলি ও ব্রাশের চলন সহজ কিন্তু তার প্রকাশের শক্তি তীব্র ও প্রচণ্ড আবেগে ভরপুর। সুমনার ছবিগুলো যেন আলোর সঙ্গে রঙের এক চমৎকার ফিউশন সৃষ্টি করে ছবির গ্রামাটিক ফর্মকে অতিক্রম করে সৃষ্টি করে এক সাংগীতিক অর্কেস্ট্রেশন। আনন্দ ও সদা হাস্যময়তা এবং রোমান্টিকতা তাঁর ছবিগুলোকে এক অতুলনীয় বিচিত্রতায় ভরে দিয়েছে। স্বাচ্ছন্দ্য, সারল্য, অনাড়ম্বরতা এই শিল্পীর প্রতিটি ছবিরই বৈশিষ্ট্য।“ |
| প্রতিবেদক: স্থপতি ফাইজা ফাইরুজ |