আর্বান টিউন-আপ: আর্কিটেকচারাল প্যাকেজের মাধ্যমে ব্লকভিত্তিক শহরের ছাদে জনজীবন ফিরিয়ে আনা

স্থাপত্য ও নির্মাণ
শিক্ষার্থীদের প্রকল্প
৪ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫
২৩
আর্বান টিউন-আপ: আর্কিটেকচারাল প্যাকেজের মাধ্যমে ব্লকভিত্তিক শহরের ছাদে জনজীবন ফিরিয়ে আনা

-

প্রকল্পের নাম: আর্বান টিউন-আপ: আর্কিটেকচারাল প্যাকেজের মাধ্যমে ব্লকভিত্তিক শহরের ছাদে জনজীবন ফিরিয়ে আনা 

শিক্ষার্থীর নাম: রিদওয়ান নূর

শিক্ষাবর্ষ: ২০২৪

প্রকল্পের স্থান: কারওয়ান বাজার-ফার্মগেট এবং এর পার্শ্ববর্তী এলাকা, ঢাকা, বাংলাদেশ

প্রকল্পের শিক্ষকবৃন্দ: অধ্যাপক  ডঃ খন্দকার সাব্বির আহমেদ, মাহেরুল কাদের প্রিন্স

বিভাগীয় প্রধান: ডঃ এস এম নাজমুল ইসলাম

মনোনয়ন: ১. তামায়ুজ এক্সিলেন্স অ্যাওয়ার্ড ২০২৪ আন্তর্জাতিক প্রকল্পগুলোর মধ্যে শীর্ষ ৫০-এ নির্বাচিত

২. আর্কিডায়েরিজ-এ প্রকাশিত

Ridwan Noor Photoরিদওয়ান নূর

ঢাকা শহর। এই শহরে কোটি মানুষের বসবাস, কিন্তু শহরের বুকে যেনো কোনো প্রাণ নেই। নেই খেলার জায়গা, নেই আড্ডার সুযোগ, নেই এক চিলতে সবুজ যেখানে গিয়ে নিঃশ্বাস ফেলা যায়। সাধারণ মানুষের জন্য সামাজিক জীবনের সুযোগ প্রায় শূন্য। ঢাকার গলি, দালান আর ভিড়ের ভেতর খোলা জায়গা যেনো হারিয়ে গেছে।

1ছবি: বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকার বর্তমান অবস্থা

তবে, এই শহরে এমন অনেক জায়গা আছে যা আমরা চোখে দেখি না। এলোমেলো উন্নয়নের ফলে তৈরি হয়েছে অনেক ফাঁকা জায়গা, যেগুলো পরিত্যক্ত আর অযত্নে পড়ে আছে। এই জায়গাগুলো শহরের জীবনের সঙ্গে মিশে নেই, কিন্তু এগুলোর ভেতরে বিশাল এক সম্ভাবনা লুকিয়ে আছে। এই ব্যস্ত আর ঠাসা শহরের সবচেয়ে বড় অব্যবহৃত সম্পদ হলো ছাদ। আমার ভাবনা হলো, এই ছাদগুলোকে একটি নেটওয়ার্কের সাথে একসঙ্গে জুড়ে দেওয়া। প্রতিটি ছাদে এমন কিছু স্থাপত্য উপকরণ যোগ করা, যা সেগুলোকে নতুন জীবনের স্পন্দন দেবে। নিষ্প্রাণ ছাদগুলো পরিণত হবে প্রাণবন্ত, কার্যকর আর মানুষের মেলামেশার জায়গায়। এই নতুন স্তর হবে শহরের সামাজিক জীবনের একটি নতুন অধ্যায়। এখান থেকে মানুষ ফিরে পাবে হারিয়ে যাওয়া সম্পর্ক। ছাদে তৈরি হবে খেলার জায়গা, গল্প করার স্থান, আর সবুজের ছোঁয়া। সাধারণত পার্কগুলো থাকে শহরের বাইরে, যেখানে মানুষ কাজ শেষে স্বস্তি খুঁজতে যায়। কিন্তু এই কনসেপ্টে পার্কগুলো শহরের ভেতরেই থাকবে, ছাদের উচ্চতায়, শহরের অবকাঠামোর অংশ হয়ে।

7 Bnছবি: ধারণাগত অঙ্কন

এটি শুধু একটি স্থাপত্য প্রকল্প নয়, এটি একটি স্বপ্ন; একটি প্রাণবন্ত ঢাকার স্বপ্ন। যেখানে ছাদগুলো হবে নতুন দিনের সূচনা। ঢাকাকে নতুন করে চিনবে মানুষ। এক শহর, যা সব শ্রেণির মানুষকে আবার একত্র করবে।

সাইট এবং প্রেক্ষাপট

সাইটটির অবস্থান ঢাকার কারওয়ান বাজার থেকে ফার্মগেট এবং তার আশপাশের এলাকায়। এই জায়গাটি অত্যন্ত ঘনবসতিপূর্ণ এবং দালান-কোঠায় ভরা। তাই প্রস্তাবিত ধারণাটি পরীক্ষা করার জন্য একে আদর্শ স্থান বলা যায়। মেট্রো রেলের নতুন স্টেশনগুলো এখানে বিশাল পরিবর্তন আনতে যাচ্ছে। এই এলাকাটি এখন ট্রানজিট-অরিয়েন্টেড ডেভেলপমেন্ট (TOD)-এর কেন্দ্রবিন্দুতে। ফার্মগেট এবং কারওয়ান বাজার মেট্রো স্টেশনের মাঝখানে অবস্থিত সাইটটি TOD এরিয়ার মধ্যে, যা ব্লক-ভিত্তিক উন্নয়নের জন্য আদর্শ। 

3ছবি: জায়গার পরিচিতি সাইট প্ল্যান

 সরকার প্রকাশিত ২০২২-২০৩৫ সালের ডিটেইল্ড এরিয়া প্ল্যান (DAP)-এ এই ধরনের ব্লক-ভিত্তিক উন্নয়নের কথা বলা হয়েছে। মেট্রো রেলের পাশে ছোট ২-৪-৬ তলা ভবনগুলো ভেঙে এখানে মিশ্র-ব্যবহারভিত্তিক উন্নয়নের সূচনা হবে। 

গত ৩০ বছরে ঢাকা তার সবুজের ৬৬ শতাংশ হারিয়েছে। এই হারানো সবুজের অভাবে শহরের তাপমাত্রা আরও বেড়েছে। এখন ঢাকার ৯০ শতাংশ এলাকাই তীব্র তাপপ্রবাহের ঝুঁকিতে। খোলা জায়গা আর বিশ্রামের স্থান নেই বললেই চলে। শহর যেন দম বন্ধ করা এক পরিবেশে পরিণত হয়েছে। ঢাকায় সামাজিক মেলামেশার জায়গা বলতে এখন রেস্তোরাঁ বা ইনডোর স্থানগুলো বোঝায়। কিন্তু এই স্থানগুলো মানসিক প্রশান্তি দিতে পারে না। পার্কের মতো উন্মুক্ত জায়গার অভাবটা তাই শহরের মানুষের জীবনে স্পষ্ট। আমার প্রস্তাবিত ছাদের নেটওয়ার্ক এই সমস্যাগুলোর সমাধান খুঁজবে। ছাদগুলোকে এমনভাবে ব্যবহার করা হবে যাতে নগর-তাপমাত্রা কমে, জলাবদ্ধতার সমস্যা দূর হয়, আর সামাজিক মেলামেশার নতুন জায়গা তৈরি হয়। এই ছাদ-নেটওয়ার্ক শহরে নতুন অর্থনৈতিক সম্ভাবনাও নিয়ে আসবে। অব্যবহৃত ছাদগুলো রূপান্তরিত হবে মূল্যবান গণপরিসরে।

 

4ছবি: ডেভেলপমেন্ট কন্ট্র্যাস্ট ম্যাপ: জোন ০১ এবং জোন ০২-এর নির্বাচন

 

6ছবি:ছাদের দৃশ্যপট: বর্তমান অবস্থা বনাম প্রস্তাবিত ভবিষ্যৎ

সীমাবদ্ধতা:

যান্ত্রিক জঙ্গল, খালি জায়গা (dead spaces), অগম্যতা

 নগর তাপ দ্বীপের (heat island) প্রভাব বৃদ্ধি

বর্ধিত শক্তি খরচ (যান্ত্রিক শীতলীকরণ ব্যবস্থা)

বাইরের আরামদায়ক তাপমাত্রা হ্রাস

ঝড়ের জল প্রবাহ

এই সমস্যাগুলি সমাধানের জন্য, শহরগুলিকে বৃহৎ পরিসরে সবুজ ছাদ বাস্তবায়ন করতে হবে

4ছবি:কেস স্টাডি

সমাধান:

উঁচু বাগান, পাবলিক স্পেস, প্রবেশযোগ্য

সবুজ ছাদের তাপমাত্রা প্রচলিত ছাদের তুলনায় ৩০-৪০ ফারেনহাইট কম হতে পারে এবং শহরজুড়ে পরিবেশের তাপমাত্রা ৫ ফারেনহাইট পর্যন্ত কমাতে পারে। গাছপালা সর্বদা ছায়া প্রদানের মাধ্যমে সার্ফেস এবং বাতাসের তাপমাত্রা কমিয়ে দেয়, সেইসাথে ইভাপোট্রান্সপিরেশন-এরও (বাষ্পীভবন শীতলকরণ) ব্যবস্থা করে।

মাটির ধরণ, নিষ্কাশন এবং উদ্ভিদ প্রজাতির মতো বিষয়গুলির উপর নির্ভর করে সবুজ ছাদগুলি মাটির ওপর একটি পাতলা স্তরে (প্রায় ৫ সেমি) স্থাপন করা যায়। ঘন গাছপালা এবং গাছের একটি পুরু স্তর (প্রায় ১ মিটার পর্যন্ত) স্থাপন করা যেতে পারে। বাংলাদেশের মতো গ্রীষ্মমন্ডলীয় জলবায়ুতে, ছাদের মতো সমতল পৃষ্ঠের উপর তীব্র সৌর বিকিরণ এবং আর্দ্র গ্রীষ্মমন্ডলীয় অঞ্চলে গাছপালার উচ্চ বৃদ্ধির কারণে সবুজ ছাদ কার্যকর হতে পারে।

ডিজাইনের প্রক্রিয়া

ডিজাইনটির কৌশল তিনটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদানে বিভক্ত। প্রথমত, প্লটভিত্তিক এবং ব্লকভিত্তিক উভয় ক্ষেত্রের জন্যই পারস্পরিক সংযুক্ত ছাদের স্তর তৈরি করা। দ্বিতীয়ত, ছাদকে সক্রিয় করার জন্য কিছু আর্কিটেকচারাল প্যাকেজ তৈরি করা। তৃতীয়ত, একটি এলিভেটেড ওয়াকওয়ে, যা গাড়ি-কেন্দ্রিক ঢাকাকে এক নতুন মাত্রায় নিয়ে যাবে। এই উপাদানগুলো একত্রে একটি সমন্বিত নগর ব্যবস্থার রূপরেখা তৈরি করবে।

1ছবি:ডিজাইনের কৌশলসমূহ

 

19

ছবি: দ্য আর্বান সিস্টেম

 

6a

6bছবি: জোন ০১-এর ব্লক পরিকল্পনা

8a

 

 

8bছবি: অপটিমাল ব্লকের কার্যকারিতা বিশ্লেষণ

9ছবি: জোন ০২-এর ব্লক পরিকল্পনা

ঢাকার ডিটেইল্ড এরিয়া প্ল্যান ২০২২ এবং আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত নগর পরিকল্পনার ধারণা মিলিয়ে ভবিষ্যতের উন্নয়নের জন্য একটি সাইট মাস্টারপ্ল্যান তৈরি করা হয়েছে। আর্বান ব্লকগুলো প্যারামেট্রিকভাবে ডিজাইন করা হয়েছে এবং সবচেয়ে কার্যকর ব্লক কাঠামোটি নির্বাচন করা হয়েছে। এর ওপর ভিত্তি করে ছাদের সম্ভাব্য স্তরটি চিহ্নিত করা হয়েছে, যেই স্তরটির উপর আর্কিটেকচারাল প্যাকেজগুলো মিশে যাবে।

 

10ছবি: জোন ০২-এর রাস্তায় সোলার এনভেলপ-এর প্রয়োগ

13ছবি: আর্বান ফোলির নমুনাসমূহ

15ছবি: আর্বান সিস্টেমের ধারণাগত চিত্র

12ছবি: রুফ মডিউলস এবং ফোলির গঠন প্রক্রিয়া

14ছবি: রুফটপ ফরমেশন: প্রাইমারি ফোলি এবং রুফ মডিউলস

 

ঢাকার ইট-কংক্রিটের ভিড়ে খোলা জায়গা বা সবুজের কোনো অস্তিত্ব নেই। আর্কিটেকচারাল প্যাকেজগুলোর মাধ্যমে নিষ্প্রাণ ছাদগুলোকে জনজীবনের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত করা হবে। এই প্যাকেজগুলো নগরীর ক্রমাগত পরিবর্তনশীল চাহিদার সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিতে এবং রূপান্তরিত হতে সক্ষম। প্রতিটির গঠন নির্দিষ্ট ছাদের আকার অনুযায়ী ডিজাইন করা হয়েছে এবং এগুলোর জন্য কোনো নির্দিষ্ট কাজের প্রোগ্রাম নেই। ফলে এগুলো খেলার স্থান, কমিউনিটি ইভেন্ট, আরবান ফার্মিং, খাবারের ছোট ছোট কিয়স্ক সহ বিভিন্ন কাজে ব্যবহার করা সম্ভব।

 

3ছবি: ম্যাক্রো স্কেলের ডিজাইন ইন্টারভেনশন : শহুরে দৃশ্যপট

11ছবি: মাইক্রো স্কেলের ডিজাইন ইন্টারভেনশন: আর্কিটেকচারাল প্যাকেজ

17ছবি: মাইক্রো স্কেলের ডিজাইন ইন্টারভেনশন: এলিভেটেড ওয়াকওয়ে

 

16

15a

15b

ছবি: ফোলির বৈশিষ্ট্যসমূহ

 
প্রস্তাবিত এলিভেটেড ওয়াকওয়েটি দুই মেট্রো স্টেশনের মধ্যে জনজীবনে প্রাণ সৃষ্টির একটি অন্যরকম মাধ্যম হিসেবে কাজ করবে। ২০-২২ মিটার উঁচু মেট্রো পিলারগুলোর নিচে থাকা খালি জায়গাটাকে চিন্তা করে এটির প্রস্তাবনা দেওয়া হয়েছে। এটি পথচারীদের চলাচলকে আরো সহজ করে, নতুন মিশ্র-ব্যবহারভিত্তিক ব্লকগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপন করে এবং স্টেশনগুলোতে নামা মানুষের ভিড় কমাতে সাহায্য করে। প্রধান সড়কটি দীর্ঘ পথের কারণে সরল এবং সোজা পথে চলে, কিন্তু এলিভেটেড ওয়াকওয়ে স্থানীয় লজিকের ওপর ভিত্তি করে তৈরি। ফার্মগেট এলাকার আর্বান ফেব্রিকের যেই অর্গানিক রুপ আছে, ওয়াকওয়েটির স্ট্রাকচারটিতে সেই শহুরে কাঠামোর প্রতিফলন পাওয়া যায়। 

18ছবি: এলিভেটেড ওয়াকওয়ের বিবরণ

15ছবি: নিউম্যাটিক ফোলির বিস্তারিত বিবরণ

14শহরের এলিভেটেড স্তরটি দিয়ে গেমিফাইড অভিজ্ঞতা প্রদান

 

9ছবি: মাস্টারপ্ল্যান: ব্লক ভিত্তিক ভবিষ্যৎ উন্নয়ন

 
 

ভবিষ্যতের ব্লক-ভিত্তিক পরিস্থিতি। এই মাস্টার প্ল্যানটি ব্লক উন্নয়নের জন্য দুটি প্রাথমিক অঞ্চলের উপর দৃষ্টি নিবদ্ধ করে। এই ব্লকগুলিতে, ছাদগুলি ব্যক্তিগত মালিকানাধীন পাবলিক স্পেস হিসাবে কাজ করে।

চূড়ান্ত ফলাফল

ঢাকার জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত বাসাগুলোকে তিন ধরনের ল্যান্ড-ইউজ প্যাটার্নের মধ্যে ভাগ করা হয়েছে: আবাসিক, বাণিজ্যিক এবং মিশ্র-ব্যবহারভিত্তিক। এগুলোকে আবার দুই ধাপে দেখা হয়েছে। একদিকে বর্তমান প্লট-ভিত্তিক অবস্থা, অন্যদিকে ভবিষ্যতের ব্লক-ভিত্তিক পরিকল্পনা। "আরবান টিউন-আপ" ধারণাটি বর্তমান এবং ভবিষ্যৎ উভয় প্রেক্ষাপটে পরীক্ষা করা হয়েছে, যাতে বোঝা যায় কীভাবে এখনকার ছাদের ব্যবহার বদলে দিয়ে একটি প্রাণবন্ত, কার্যকর ব্যবস্থা তৈরি করা যায়।

 

1মেসো স্কেলের ডিজাইন ইন্টারভেনশন: প্লট ভিত্তিক দৃশ্যপট (বর্তমান মূল্যায়ন)

প্লট-ভিত্তিক বর্তমান অবস্থার মূল্যায়ন: বর্তমানের প্লট ভিত্তিক আবাসিক ভবনগুলোতে ছাদের ব্যবহার নির্ভর করবে বাড়ির মালিকের ইচ্ছার ওপর। কিছু ছাদ জনসাধারণের জন্য খোলা থাকবে। আবার কিছু ছাদ কেবল মালিক বা বাসিন্দাদের জন্য সীমিত থাকবে। বাণিজ্যিক ভবনগুলোতেও একই ধাঁচ অনুসরণ করা হবে। কিছু অংশ জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত হতে পারে, কিন্তু ব্যবহারকারীদের জন্য কিছু অংশ ব্যক্তিগত রাখা হবে।

8

মেসো স্কেলের ডিজাইন ইন্টারভেনশন: ব্লক ভিত্তিক দৃশ্যপট (ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা)

ব্লক-ভিত্তিক ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা: ভবিষ্যতের ঢাকা কেমন হবে? এই পরিকল্পনা বলে, ছাদগুলো একত্রে একটি সংযুক্ত নেটওয়ার্কে পরিণত হবে। মেট্রোর এলিভেটেড ওয়াকওয়ে দিয়ে এক ছাদ থেকে অন্য ছাদে চলাচলের ব্যবস্থা থাকবে। এলাকাগুলোর ভেতরে এগোতে থাকলে, ছাদগুলো ধীরে ধীরে মালিকদের ব্যক্তিগত জায়গায় রূপান্তরিত হবে। এই ব্যবস্থাটি শহরের স্থানগুলোকে এমনভাবে গড়ে তুলবে যেখানে কমিউনিটির মেলামেশা ব্যক্তিগত গোপনীয়তা দুই- বজায় থাকবে।

2

ফোকাসড এরিয়া প্ল্যান (দৃশ্যপট ০১)

5প্লট ভিত্তিক বাণিজ্যিক মিশ্র ব্যবহারভিত্তিক ভবনগুলোর ছাদের দৃশ্যপট (দৃশ্যপট ০২)

6হাই-রাইজ বাণিজ্যিক ভবনগুলোর সাথে এলিভেটেড ওয়াকওয়ের সমন্বয় (দৃশ্যপট ০৩)

 

3ছবি: প্লট ভিত্তিক বাণিজ্যিক ভবনগুলোর ছাদের দৃশ্যপট

4ছবি: প্লট ভিত্তিক বাণিজ্যিক ভবনগুলোর ছাদের দৃশ্যপট

 
 

7প্লট থেকে ব্লক ডেভেলপমেন্টে রূপান্তরকরণ

এ প্রকল্পের ধারণা ঢাকার ভবিষ্যতের জন্য নতুন সম্ভাবনার দরজা খুলে দিতে পারে। নিচতলাগুলো স্থায়ী, ওজনদার এবং ইট-পাথর-কংক্রিটে তৈরি থাকবে। কিন্তু উপরের স্তরটি হবে পরিবর্তনশীল এবং প্রাণবন্ত। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এটি কমিউনিটির প্রয়োজন অনুযায়ী বদলাবে। 

ধীরে ধীরে ছাদ হয়ে উঠবে মানুষের সামাজিক, সাংস্কৃতিক, আর সবুজ জীবনের ঠিকানা। ঢাকার মতো ব্যস্ত এবং ঘিঞ্জি শহরে এমন একটি ধারণা নিঃসন্দেহে শহরটিকে নতুন করে গড়ে তুলতে পারে।

 
 

11সেকশন CC’: এলিভেটেড ওয়াকওয়ের মাধ্যমে পাবলিক এবং প্রাইভেট ছাদগুলোতে সংযোগ স্থাপন

13সেকশন BB’: ভবিষ্যৎ উপযোগী এবং সময়ের সাথে মানিয়ে চলা শহুরে কাঠামোর জন্য রুফটপ আর্কিটেকচারের প্রয়োগ

 

জুরি মন্তব্য:

. খন্দকার সাব্বির আহমেদ (অধ্যাপক, বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়)

প্রজেক্টটির সবচেয়ে ইন্টারেস্টিং বিষয়টি হলো, যে প্রজেক্টটির আউটকাম দেখে হয়তো এটাকে তথাকথিত দেশে ইমপ্লিমেন্টেশন যোগ্য না, সেটা মনে হতে পারে। কিন্তু শুরু থেকেই লক্ষ্য করলে বোঝা যায় যে, লোকাল গাইডলাইন্স, রুলস এন্ড রেগুলেশন ব্যবহার করে, সেটার সাথে ইন্টারন্যাশনাল প্র‍্যাক্টিসের একটি সমন্বয় ঘটিয়েই প্রজেক্টটির ভিত্তি দাঁড়িয়েছে। এবং, স্টুডিও প্রজেক্ট হিসেবে সে সেটাকে চূড়ান্ত মাত্রায় নিয়েছে। তাই এটিকে একটি সাক্সেসফুল চিন্তা বলা যেতে পারে। পলিসি লেভেলে এইধরণের কথাগুলো পৌছানোই আর্কিটেক্ট হিসেবে আমাদের কাজ।

ড. জেবুন নাসরিন আহমেদ (অধ্যাপক, বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়)

ছাদকে নতুন ভাবে চিন্তা করার বিষয়টি ছিন্ন ছিন্ন ভাবে অনেকখানে দেখা গেলেও, কিভাবে আর্বান স্কেলে চিন্তা শুরু করে, একেবারে মাইক্রো লেভেল এ পৌছিয়ে একটি ধারা শুরু করা যেতে পারে, প্রজেক্টটিতে সেটি দেখা যাচ্ছে। ঢাকা শহরের খুবই চিরাচরিত সমস্যাগুলো সম্ভব, যদি সবাই মিলে ছাদকে নতুনভাবে দেখা শুরু করে।

10ব্লক ভিত্তিক ভবিষ্যৎ পরিকল্পনায় ছাদের নেটওয়ার্ক (দৃশ্যপট ০৪)

12ব্লক ভিত্তিক ভবিষ্যৎ পরিকল্পনায় ছাদের নেটওয়ার্ক (দৃশ্যপট ০৫)

 

17

আর্কিটেকচারাল ফোলিগুলো সময়ের সঙ্গে মানিয়ে চলতে সক্ষম

 

18

একটি ইলাস্টিক শহর, যেখানে ছাদগুলো অর্থাৎ ক্রমান্বয়ে দিগন্তরেখা মানুষের চাহিদা অনুযায়ী বদলায়

প্রতিবেদক: স্থপতি ফাইজা ফাইরুজ

আপনার মতামত দিন

কমেন্ট

User Image

Faria Hossain Ikra

৮ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫

One of the finest architectural concept that has been explored to make any city accessible for everyone. Cities like Dhaka, need more of such ideas where the existing buildings can be upcycled. As a citizen of Dhaka, I believe implementing this project in the policy making will not only bring more organised architectural structures, but will also give us access to better social life and will let us connect with each other in a more healthy manner.

User Image

Hossain Ishrat

৮ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫

Great thinking...Very hard to be implemented at current context, but pilot projects like this might start a new way of thinking of urban rooftops.

Logo
Logo
© 2025 Copyrights by Sthapattya o Nirman. All Rights Reserved. Developed by Deshi Inc.