ছবি: বইয়ের সামনের পাতা |
ছবি: বইয়ের পেছনের পাতা |
প্রাচীন বাংলার স্থাপত্যধারা |
বিশ্ববিদ্যালয়ে স্থাপত্যের শিক্ষক স্থপতি ড. সাজিদ বিন দোজার প্রিয় বিষয় স্থাপত্যের ইতিহাস, বিশেষ করে বাংলাদেশের স্থাপত্যের ইতিহাস নিয়ে তিনি দীর্ঘকাল গবেষণা করে চলেছেন। গবেষণার পাশাপাশি তিনি অত্যন্ত দক্ষতার সাথে প্রচুর ড্রইং করেছেন। এসব ড্রইং এর আলাদা প্রদর্শনীও অনুষ্ঠিত হয়েছে। এই বইটির পুর্বসূরী হিসাবে তিনি ’Homesteads of the Barind Landscape’ শিরোনামে আরেকটি বই লিখেছেন। বিষয়বস্তুর মধ্যে একটা ধারাবাহিকতা রয়েছে, তবে এবার তিনি বাংলায় লিখেছেন। |
স্থাপত্য নিয়ে লেখালেখি কোন সহজ বিষয় নয়, বিষয়গত পরিভাষার আধীক্যে এডভেঞ্চার বা ভ্রমণ কাহিনীর পাঠে অভ্যস্ত পাঠকের জন্য এ রকম বই কিছুটা নিরস মনে হতে পারে। কিন্তু স্থাপত্য সংক্রান্ত প্রকাশনায় অনেক ড্রইং এবং ছবি থাকে, ফলে এসব বই পাঠকেরা অন্ততপক্ষে হাতে নিয়ে পাতা ওলটান। ইতিহাসের পটভূমিতে ‘বাংলা’ নামের অঞ্চলটির আদি পরিচয় খুঁজে তার একটা নির্মাণ পরম্পরা তুলে ধরার ইঙ্গিত রয়েছে বই এর নামকরণইে। সেই কাজটি করতে গিয়ে এ অঞ্চলে বিভিন্ন সময়ে যে সব রাজবংশ বা শাসকরা বিভিন্ন স্থাপনা গড়ে তুলে স্থাপত্য চর্চার নানা ধরণের প্রভাব তৈরী করেছে, সেগুলি লেখক যত্নের সাথে তুলে ধরেছেন। |
ভারতবর্ষ মানব সভ্যতার অনন্য পীঠস্থান। চার হাজার বছরের হরপ্পা-মহেঞ্জাদারো সভ্যতার স্থাপত্যিক নিদর্শন এখানে রয়েছে। তবে বর্তমান বাংলাদেশ বা বৃহত্তর বঙ্গে সেরকম স্থাপনা যা পাওয়া যায়, সেগুলি দুই থেকে আড়াই হাজার বছরের পুরানো। লেখক এই বইয়ে ইতিহাসের ধারাবাহিকতায় সেই মহার্ঘ স্থাপনাগুলি পাঠকদের জন্য তুলে ধরেছেন। তার আলোচনায় গুপ্ত-পাল-সেন যুগ থেকে শুরু করে সুলতানী ও মোঘল আমলের নানা ইমারত প্রকাশিত হয়েছে। তার পরিবেশনাকে চিত্তাকর্ষক করেছে তার আঁকা ড্রইংগুলি। ড্রইংগুলি এতই সমৃদ্ধ যে, শুধুমাত্র সেগুলি পৃথক প্রকাশনার দাবী রাখে। বইটি শক্তভাবে হার্ড কভারে বাধাই করে সংগ্রহে রাখার উপযোগী। ভিতরের কাগজ ভাল এবং ছাপা ঝকঝকে, বয়স্কদের উপযোগী। আশা করি বইটি পাঠক সমাদৃত হবে। |