প্রখ্যাত স্থপতি এবং বাংলাদেশের স্থাপত্য-শিক্ষার এক উজ্জ্বল ব্যক্তিত্ব, অধ্যাপক মীর মোবাশ্বের আলী বিগত ০৮.০২.২০২৫ তারিখ শনিবার সকালে মৃত্যুবরণ করেন। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৮৪ বছর। অধ্যাপক আলী ছিলেন একজন বিশিষ্ট স্থপতি এবং দূরদর্শী শিক্ষাবিদ। ১৯৬২ থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত প্রায় ৪৫ বছর অধ্যাপক মীর মোবাশ্বের আলী বুয়েটের অবিচ্ছেদ্য অংশ ছিলেন। তিনি স্থাপত্য বিভাগ গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন, এর প্রধান এবং পরে অনুষদের ডিন হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন। |
অধ্যাপক আলী কেবল একজন নিবেদিতপ্রাণ শিক্ষকই ছিলেন না, স্থাপত্যের একজন দক্ষ অনুশীলনকারীও ছিলেন। তাঁর উল্লেখযোগ্য নকশাগুলির মধ্যে রয়েছে: টঙ্গীতে টেলিফোন ইন্ডাস্ট্রিজ কর্পোরেশন (টিআইসি) ভবন, ফৌজি জুট মিল, ঘোড়াশাল ফ্ল্যাগ স্টেশন এবং অফিস ভবন, চট্টগ্রামের পতেঙ্গায় বিসিআইসি হাউজিং, ঢাকা বিমানবন্দরে সিভিল এভিয়েশন অফিস এবং ফ্রেইট টার্মিনাল, মেয়েদের ডরমেটরি এবং বুয়েটে বেশ কয়েকটি ব্যক্তিগত বাসস্থান। তিনি ‘সমতটে সংসদ: বাংলাদেশের স্থাপত্য সংস্কৃতি, লুই কান এবং সংসদ ভবন’ শীর্ষক একটি বইও লিখেছেন। তাঁর কাজ ভবন নকশার বাইরেও বিস্তৃত ছিল; তিনি জাতীয় পর্যায়ের পরিকল্পনা এবং নকশা উদ্যোগে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেছিলেন, যা বাংলাদেশের নগর উন্নয়নে এক উল্লেখযোগ্য ছাপ রেখে গেছে। আন্তর্জাতিকভাবে, তিনি এমআইটি (মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র), লুভেন (বেলজিয়াম), অ্যালিকান্তে (স্পেন) এবং বিআইটি (কলকাতা) এর মতো মর্যাদাপূর্ণ প্রতিষ্ঠানে বক্তৃতা প্রদান করেন। প্রচারবিমুখ একজন ব্যক্তি হলেও, তাঁর ব্যক্তিগত এবং পেশাগত অভিজ্ঞতা বাংলাদেশের স্থাপত্য এবং নগর প্রশাসনের ক্ষেত্রে স্থায়ী প্রভাব ফেলেছে। তাঁর নির্দেশনা অগণিত ছাত্র এবং সহকর্মীদের অনুপ্রাণিত করেছে, প্রজন্মের পর প্রজন্ম স্থপতিদের পথ দেখিয়েছে। |
|
প্রতিবেদক: স্থপতি ফাইজা ফাইরুজ |